নিজস্ব চিত্র
কয়েকদিনের মধ্যেই রাজ্যে ঢুকতে চলেছে বর্ষা। তবে এখন থেকেই রাতের ঘুম উড়েছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানের বিঘা লাইনের শ্রমিক মহল্লার শ্রমিকদের। সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের উপন্যাসের সেই স্বর্গছেঁড়া চা বাগান আজ নদীর গ্রাসে। ভাঙনের জেরে তলিয়ে যাচ্ছে চা বাগান ও বাগানের শ্রমিক বস্তি এলাকা। সমরেশ মজুমদারের জন্মভিটে এই চা বাগানেই। এখানেই তাঁর বড় হয়ে ওঠা। তিনি তাঁর ‘উত্তরাধিকার’ উপন্যাসে এই গয়েরকাটা চা বাগানকে ‘স্বর্গছেঁড়া’ চা বাগান বলে উল্লেখ করেছেন।
গত বর্ষায় ভুটান পাহাড় ও ডুয়ার্সে ভারী বৃষ্টির জেরে সাকোয়াঝোড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গয়েরকাটা চা বাগানের বিঘা লাইনে আংরাভাসা নদী প্লাবিত হয়। নদী ভাঙনে ১৪টি চা শ্রমিক আবাস নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কয়েকটি সুপারি বাগান ও কবরস্থানে। গত ২ বছরে মোট ২১টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। এবারও একই আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন তাঁরা। বছর খানেক আগে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে প্রশাসন। কিন্তু মাঝপথে আচমকাই থমকে যায় সেই কাজ। এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত শেষ হয়নি বাঁধ নির্মাণের কাজ। বছরের অন্যান্য সময় আংরাভাসা নদীতে হাঁটুজল থাকলেও বর্ষায় ডুয়ার্স ও ভুটান পাহাড়ে ভারী বৃষ্টি হলে ভয়াবহ রূপ নেয় এই নদী। এখনও সেই এলাকার নদীর পাড়ে ভগ্ন অবস্থায় ঝুলে রয়েছে দুটি শ্রমিক আবাস। যে কোনও মুহূর্তে ধসে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই আগে থেকেই বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন বাড়ির লোকেরা।
গ্রামবাসীদের দাবি, বর্ষার আগেই দ্রুত বাঁধ নির্মানের কাজ শেষ করা হোক। স্থানীয় বাসিন্দা কেলে তিরর্কি, সঞ্জয় মিঞ্জ, মন্দীপ তিরর্কিরা বলেন, ‘‘বাঁধের কাজ শেষ করতে পারেনি প্রশাসন। খুবই ধীর গতিতে কাজ চলছে। আমরা চাই দ্রুত এই বাঁধের কাজ শেষ করে প্রশাসন আমাদের রক্ষা করুক।’’ এলাকার তৃণমূলের যুব নেতা বিরাজ লাকরা বলেন, ‘‘২ বছর ধরে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক শ্রমিকের বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। সম্ভবত কিছু ত্রুটির কারণে কাজটি দীর্ঘদিন থমকে আছে। তবে এই মুহূর্তে নতুন করে আবার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি বর্ষার আগেই বাঁধের কাজ সম্পন্ন হবে।’’
জলপাইগুড়ি মহকুমার সেচ আধিকারিক সুব্রত শুর বলেন, ‘‘গত বছর জরুরি ভিত্তিতে কিছুটা কাজ করা হয়েছিল। নতুন করে টেন্ডার করে এই মুহূর্তে আবার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি জুন মাসের ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যেই পুরো কাজটি সম্পন্ন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy