Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Education

Education: শুনশান বিমানবন্দরে উন্মুক্ত স্বপ্নের ‌উড়ান

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে উড়ান বন্ধ রয়েছে মালদহ বিমানবন্দরে। হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু হলেও এখন তা অনিশ্চিত।

পঠনপাঠন: ‘দাদুর উন্মুক্ত স্কুলে’ চলছে ক্লাস।

পঠনপাঠন: ‘দাদুর উন্মুক্ত স্কুলে’ চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ সাহা
ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২১ ০৯:২৯
Share: Save:

স্কুলের দুয়ার এখনও বন্ধ। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারে অনলাইনে পড়াশোনা স্বপ্ন। শুনশান বিমানবন্দরে ‘দাদুর উন্মুক্ত স্কুলই’ স্বপ্নের উড়ানের দিশা দেখাচ্ছে মালদহের খুদে পড়ুয়া অভ্রজিৎ, নন্দিনীদের। করোনা আবহে স্কুল বন্ধ থাকায় বিমানবন্দর চত্বরে পাতা কুড়োনো থেকে শুরু করে গরু, ছাগল চরিয়েই দিন কাটত তাদের। টানা আট মাস ধরে এমনই পরিবারের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কার্যত স্কুল খুলে ফেলেছেন শহরের প্রাতঃভ্রমণকারী ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক থেকে কলেজ পড়ুয়ারা।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে উড়ান বন্ধ রয়েছে মালদহ বিমানবন্দরে। হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু হলেও এখন তা অনিশ্চিত। মালদহ বিমানবন্দরে ফের উড়ান চালু এখন স্বপ্ন জেলাবাসীর কাছে। তবে শুনশান বিমানবন্দরেই এখন স্বপ্নের উড়ানে ভাসছে ইংরেজবাজারের বাহান্নবিঘা, গোপালনগর, কৃষ্ণনগর, জাহাজফিল্ডের একদল খুদে পড়ুয়া। করোনা আবহে বিমানবন্দরে প্রাতঃভ্রমণ করতেন শহরের বাসিন্দা ওষুধ ব্যবসায়ী দেবাশিস চক্রবর্তী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়রাম মণ্ডলেরা। সেই সময় বিমানবন্দরে ছোট ছেলে, মেয়েদের পাতা কুড়োনো কিংবা গরু, ছাগল চরাতে দেখতেন তাঁরা। তখনও খুদেদের নিখরচায় পড়ানোর সিদ্ধান্ত মাথায় আসে দেবাশিসের।

প্রথম দিকে, দুজনকে নিয়ে বিমানবন্দরে আম গাছের তলায় শুরু হয় পঠন-পাঠন। এখন সেই সংখ্যাটা প্রায় ১২৪। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা এখন রোজ সকাল আটটা নাগাদ বই, খাতা নিয়ে হাজির হয় দাদুর উন্মুক্ত স্কুলে। দাদুর উন্মুক্ত স্কুল কেন? দেবাশিস বলেন, “চুল, দাড়িতে পাক ধরায় ছেলে-মেয়েরা আমাদের দাদু বলে ডাকতে শুরু করে। এখন সবার কাছে দাদুর স্কুল বলেই পরিচিত। সকাল আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত খুদেদের পড়ানো হয়।” এমনকি, খাতা, কলমের মতো সামগ্রীও দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

দাদুর উন্মুক্ত স্কুলে দুই নাতি, নাতনিকে রেখে বিমানবন্দরে গরু চরান গোপাল নগরের বাসিন্দা ভরত ঘোষ। তিনি বলেন, “বড়দের স্কুল খুললেও নাতি, নাতনিদের স্কুল খুলেনি। আর দুই থেকে তিনশো টাকা খরচ করে টিউশন পড়ানোর ক্ষমতা আমাদের নেই।" শহরের বাসিন্দা কোয়েল নন্দী বলেন, “স্কুলের মতো পরিকাঠামো নেই ঠিকই। তবে পড়ুয়াদের উৎসাহ, আবেগ দেখে খুবই ভালো লাগছে।” পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া অভ্রজিৎ মণ্ডল জানায়, “পড়াশোনা করে এই বন্দর থেকেই বিমান ওড়াতে চাই।”

অন্য বিষয়গুলি:

Education Malda airport school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy