শোকার্ত পরিজন। শিলিগুড়ির প্রণামী মন্দির রোডের বাড়িতে। — সন্দীপ পাল
প্রাক্তন কাউন্সিলরের স্বামীকে খুনের নেপথ্যে সব ধরনের কারণই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শনিবার সকালে শিলিগুড়ির প্রণামী মন্দির রোডে তাঁর গ্যারেজ থেকে উদ্ধার হয়েছে মনোজ শর্মার দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান গ্যারেজে সদ্য নিযুক্ত চৌকিদার মনোজবাবুকে খুন করে সোনার অলঙ্কার, টাকা-এটিএম কার্ড নিয়ে পালিয়েছে।
মনোজবাবুর ঘনিষ্ঠ একাংশদের দাবি, নজর ঘোরানোর জন্যই টাকা-গয়না লুঠ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ছক কষে তবেই মনোজবাবুকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এ দিন পুলিশ তদন্তে গেলে, মনোজবাবুর পরিবারের সদস্যরাই জানিয়েছেন রাতবিরেতে তাঁর মোবাইলে দুই মহিলার ফোন আসত। সম্প্রতি এই ফোন আসা শুরু হয়েছিল। তাঁরা কারা তা মনোজবাবু কোনওদিন জানায়নি। গ্যারেজে নতুন কাজে আসা চৌকিদারের সূত্রেই দুই মহিলার সঙ্গে মনোজবাবুর আলাপ হয়েছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। এই দুই মহিলার পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘অপরাধের উদ্দেশ্য কী ছিল তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।’’
সপ্তাহ দুয়েক আগেই এক নেপালি ভাষী যুবককে গ্যারেজের পাহারার কাজে নিয়োগ করেন মনোজবাবু। এমনিতেই এলাকায় রাতপাহারা রয়েছে, তারপরেও কেন চৌকিদার প্রয়োজন হল সে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবারের সদস্যরাই। যদিও মনোজবাবুই ওই যুবককে কাজে নিয়োগ করেন। যুবকের বাড়ি ডুয়ার্সের কোনও এলাকায় বলে পরিবারের সদস্যদের জানান তিনি। স্বাস্থ্যবান এবং কেতাদুরস্ত এক যুবককে চৌকিদারির কাজ করতে দেখে অবাক হয়ে যান এলাকার অনান্য ব্যবসায়ী এবং গ্যারেজের কর্মীরা। ওই যুবক কারও সঙ্গে কথা বলত না বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সেই যুবক গ্যারেজে আসার পর থেকে দিনে রাতে ওই যুবককে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতেও দেখা যেত মনোজবাবুকে। লোকের কাছে যুবককে ‘বডিগার্ড’ বলে পরিচয় করিয়ে দিতেন। ওই যুবকের ফেসবুক ঘেটে অসংখ্য যুবতী এবং তরুণীর খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। যার মধ্যে কয়েকজন শিলিগুড়ির পানশালায় গান করেন। তবে এই যোগাযোগ কেন খুনের দিকে এগোবে তা নিয়ে পুলিশেরই প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু মনোজবাবুর ঘনিষ্ঠদের দাবি, অন্তত যে দুই মহিলা মনোজবাবুকে ফোন করত তাদের জেরা করলে কোনও সূত্রও মিলতে পারে।
এক পুলিশ অফিসারের কথায়, ‘‘মনোজবাবুর কাছে সব সময়ে মোটা টাকা থাকত। ঘটনার দিন তিনি বাড়ি থেকে সবকটি এটিএম কার্ড গ্যারেজে নিয়ে গিয়েছিলেন। মনোজবাবুর থেকে কেউ নিয়মিত টাকা আদায় করত কিনা সে তথ্যও জোগাড় করার চেষ্টা চলছে।’’
খোঁজ মেলেনি মনোজবাবুর দু’টি মোবাইলের। এ দিন মনোজবাবুর দাদা শম্ভুবাবু দাবি করেন, ‘‘মনোজবাবুকে ছক কষেই খুন করা হয়েছে। চৌকিদার সাজিয়ে ভাড়াটে খুনিকে পাঠানো হয়েছিল। কে পাঠিয়েছিল তা পুলিশ খুঁজে বের করুক।’’ স্ত্রী প্রাক্তন কাউন্সিলর শর্মিলা দেবী বলেন, ‘‘পুলিশকে যাবতীয় তথ্য দিয়েছি। আমরা যথাযথ তদন্ত চাই।’’তদন্তে পুলিশ জেনেছে জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদও ছিল মনোজবাবুর। আপাতত উধাও হয়ে যাওয়া মনোজবাবুর দু’টি মোবাইলের কল রেকর্ডের তথ্য ঘেঁটে সূত্র পেতে চাইছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy