এ বার রঞ্জন-বোমা ফাটালেন বিজেপি নেতা
টাকা নিয়ে স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ‘কারিগর’ উপেন বিশ্বাস-কথিত ‘রঞ্জন’ যে আদতে বাগদার মামাভাগিনা গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল, তা বুধবার কলকাতা হাই কোর্টকে জানিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত মামলার মামলকারীরা। সেই ‘রঞ্জন’-এর বিরুদ্ধে এ বার বোমা ফাটালেন উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর।
রঞ্জনের ‘হাত’ কত দূর বিস্তৃত, তা বোঝাতে গিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অধুনা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর প্রসঙ্গও টানলেন তিনি। এরই পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও রঞ্জনের ‘পরিচয়’ রয়েছে বলে দাবি করলেন ওই বিজেপি নেতা। যিনি ঘটনাচক্রে, আগে তৃণমূলে ছিলেন।
দুলালের অভিযোগ, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ— সর্বত্রই টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার কারবার চালিয়েছেন চন্দন। শুধু তিনিই নন, তাঁর মতো আরও অনেকেই টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার কাজ করতেন। নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা এবং কালনার প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর নামও নেন দুলাল। বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে দুলালের অভিযোগ, ‘‘বিশ্বজিৎ কুণ্ডু নিজের বউমা, বউদি, বোন ও বউ ছাড়াও আরও ৪০ জনকে চাকরি দিয়েছেন।’’ দুলালের আরও দাবি, শাসকদল তৃণমূলের রাজ্য স্তরের অনেক নেতার সঙ্গেই চন্দনের ওঠাবসা রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই দুলাল বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং এখনকার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে ওঁর (চন্দন) যোগাযোগ ছিল। এই কিছু দিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভাইরাল ভিডিয়ো দেখলাম। একটা ছেলে অভিযোগ করছিল, ব্রাত্যদা নাকি ১০০ জনকে চাকরি দিয়েছে!’’
চন্দন এতটাই ‘প্রভাবশালী’, যে তৃণমূলের নেতারাই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন বলে দাবি করেন দুলাল। তাঁর কথায়, ‘‘স্থানীয় তৃণমূল নেতারাই ওঁর (চন্দনের) বাড়িতে এসে ওঁকে তেল দিত! কিন্তু এ সব ছাড়ুন। মুখ্যমন্ত্রীর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁর পুজো উদ্বোধন করতে এসেছিলেন! তা হলেই বুঝুন, ওঁর হাত কত দূর!’’
বছরখানেক আগে ‘সৎ রঞ্জন’ নামে একটি ভিডিয়ো ইউটিউবে প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন। ওই ভিডিয়োয় তিনি দাবি করেছিলেন, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার জনৈক রঞ্জন টাকা নিয়ে বহু লোককে স্কুলের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। গোপনীয়তার স্বার্থে ওই সময় রঞ্জনের আসল নাম প্রকাশ্যে আনেননি উপেন। ওই রঞ্জনের আসল নাম যে ‘চন্দন’, তা বুধবার আদালতে শুনানি চলাকালীন জানা গিয়েছে। যদিও তাঁর ‘রঞ্জন’ই চন্দন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে উপেন বলেছেন, ‘‘বলব না। আমার নায়ক বা খলনায়ক রঞ্জনই। ওঁর পেটে অনেক তথ্য রয়েছে।’’
নিজের ভিডিয়োয় উপেন দাবি করেছিলেন, টাকা নিয়ে চাকরি দিতে না পারলে সুদ-সহ সেই টাকা ফেরতও দিতেন রঞ্জন। সেই কারণেই এলাকার মানুষ তাঁকে ভরসাও করতেন। যদিও এই দাবি মানতে চাননি দুলাল। তিনি বলেন, ‘‘টাকা দিয়েও অনেকে চাকরি পাননি। তাঁরা চাকরি চাইতে গেলে তাঁদের বলা হয়েছে, ‘পরের বার করিয়ে দেব।’ তার পরেও যাঁরা চাকরি পাননি, তাঁদের টাকাও ফেরত দেননি রঞ্জন।’’
বাগদার প্রাক্তন বিধায়কের আরও দাবি, তৃণমূল জমানায় ২০১২ সালের পর বাগদায় যত চাকরি হয়েছে, সবই হয়েছে টাকা দিয়ে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সকলেই উপেনের ‘রঞ্জন’কে চিনতেন। রঞ্জন সক্রিয় রাজনীতিতে না জড়ালেও গত বিধানসভায় বাগদা থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে পরিতোষ সাহার টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর বড় ভূমিকা ছিল বলে দাবি দুলালের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy