চিতাবাঘকে লাঠি পেটা করার অভিযোগ বন কর্মীদের বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামবাসীদের চিতাবাঘের হাত থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেরাই সেটিকে পিটিয়ে মেরে ফেললেন। শিলিগুড়ির রাঙাপানিতে বন কর্মীদের বিরুদ্ধেই উঠল এমন অভিযোগ। বুধবার সন্ধ্যায় লোকালয়ে ঢুকে পড়া চিতাবাঘটিকে ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হয় এক রেঞ্জার। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়েই চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় বন কর্মীদের কর্ম পদ্ধতি নিয়ে অনেকগুলি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সন্ধ্যায় বন কর্মীদের কাছে খবর যায় শিলিগুড়ির গঙ্গারাম চা বাগান থেকে একটি চিতাবাঘ রাঙাপানির লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। খবর পেয়ে বন কর্মী এবং স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তার আগেই চিতাবাঘটি একটি ঘরে ঢুকে ৩ জনকে জখম করে। এক বন কর্মী জানিয়েছেন, ২ জনের জখম গুরুতর অপর জনের চোট কিছুটা কম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বন কর্মী এবং স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিতাবাঘটিকে খুঁজে ঘুম পাড়ানি গুলি করেন। তার পর সেটিকে বন্দি করেতে এগিয়ে যান বন দফতরের রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত। কিন্তু ঘুমপাড়ানি গুলি খেয়ে চিতাবাঘটি তখনও পুরোপুরি আচ্ছন্ন হয়নি। সেই সময় সঞ্জয়কে সামনে পেয়ে তাঁর পায়ে কামড়ে ধরে চিতাবাঘটি। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাকি বন কর্মীরাও। তাঁরা সঞ্জয়কে চিতাবাঘের মুখ থেকে ছাড়াতে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। তবুও চিতাবাঘটি সঞ্জয়ের পা ছাড়েনি। বন কর্মীরও লাঠি চালাতে থাকেন। অভিযোগ এই মারের ফলেই ঘটনাস্থলে মারা যায় চিতাবাঘটি। রেঞ্জার-সহ আহত মোট ৪ জনকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কিন্তু বন কর্মীদের হাতে এভাবে একটি চিতাবাঘের মৃত্যুর ঘটনায় অনেকগুলি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে–
১. চিতাবাঘ লোকালয়ে ঢোকার পর বন কর্মীরা কি জাল দিয়ে এলাকা ঘিরেছিলেন? যদি না হয় তবে কেন?
২. ঘুমপাড়ানি গুলি করার পর চিতবাঘটিকে বন্দি করতে জালের সাহায্য নেওয়া হল না কেন? সে ক্ষেত্রে সাহস দেখাতে গিয়েই কি চিতাবাঘের মুখে পড়তে হয় রেঞ্জারকে?
৩. চিতাবাঘ ধরার সময় বন কর্মীদের সুরক্ষিত রাখার জন্য বিশেষ পোশাক দেওয়া হয়েছে। সেই পোশাক কি ছিল না বন কর্মীদের কাছে? নাকি তা ব্যবহার করেননি রেঞ্জার?
৪. বন কর্মীরা যদি পিটিয়ে একটি চিতাবাঘকে মেরে ফেলেন তবে সাধারণ মানুষ এমন প্রাণীদের থেকে বাঁচতে কী আচরণ করবেন?
এলাকাবাসীর অভিযোগ এই এলাকায় ওই চিতাবাঘটাকে এর আগেও একাধিক বার দেখা গিয়েছে। তার পরেও সেটিকে ধরার জন্য খাঁচা পাতা হয়নি। তাঁদের প্রশ্ন এই চিতাবাঘটির মৃত্যুর জন্য কে দায়ী?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy