১০ নম্বর জাতীয় সড়কে নতুন করে ধস। —নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ি ধসে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকলেও চিন সীমান্তে রসদ পৌঁছতে আর সমস্যা হবে না সেনাবাহিনীর। সূত্রের খবর, বাগরাকোট থেকে গ্যাংটকের অদূরে রানিপুল পর্যন্ত সদ্য চলাচল শুরু হওয়া ৭১৭এ জাতীয় সড়়ক দিয়ে সামরিক বাহিনীর ভারী ট্রাক চলাচলের মহড়াও হয়ে গিয়েছে। যদিও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, মহড়ার কোনও প্রয়োজন ছিল না। দেশের প্রতিরক্ষার কথা মাথায় রেখেই সড়কের এক-একটি ইঞ্চি তৈরি হয়েছে। সেবক সেতু, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে গ্যাংটকে পৌঁছনোর পথ এড়িয়ে নতুন সড়ক ধরে বাগরাকোট থেকে সরাসরি লাভা-পাকিয়ং হয়ে গ্যাংটকে পৌঁছনো যাবে খানিকটা কম সময়েও। নতুন সড়কটি গ্যাংটকের কাছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে মিশবে। সেখান থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক পৌঁছয় নাথুলায় চিন সীমান্তে। অর্থাৎ, নতুন সড়ক ধরে সরাসরি বাগরাকোট থেকে চিন সীমান্তে পৌঁছে যাওয়া যাবে।
বছর দু’য়েক আগে এই সড়কের সম্পর্কে জানিয়ে সমাজ মাধ্যমে ‘পোস্ট’ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গডকড়ী। তিনি লিখেছিলেন, ‘সড়কটি কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভারতীয় সড়কটি ভূটান, চিন এবং বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিস্তৃত হচ্ছে’।
সূত্রের দাবি, ওই সড়ক তৈরির পরিকল্পনা করা হয় ২০১৭ সালে। চিন সীমান্তের ডোকলামে সংঘাতের পরেই। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে চিন সীমান্তে পৌঁছতে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিকল্প পথের খোঁজ চলছিল। কারণ, মাঝেমধ্যেই ধসের কারণে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকে। তখন সড়কপথে চিন সীমান্তের সঙ্গে দেশের বাকি প্রান্তের সেনা যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। তা ছাড়া, সরাসরি আরও কম সময়ে চিন সীমান্তে পৌঁছতে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কই একমাত্র ‘সহজ’ পথ থাকায় সেটির উপরে জঙ্গি গোষ্ঠীরও ‘নজর’ থাকে। ওই সময়েই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সমীক্ষা শুরু করেন। ছোট, সঙ্কীর্ণ পাহাড়ি পথ প্রশস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একাধিক পাহাড়ের অংশ কেটে নতুন জাতীয় সড়ক তৈরির কাজও শুরু করা হয়। সেই কাজ শেষ হওয়ায় ওই রাস্তা সম্প্রতি খুলে দেওয়া হয়েছে।
শুধু প্রতিরক্ষা নয়, ওই সড়ক ঘিরে আশা বাড়ছে পর্যটনেরও। পাহাড়ি সড়কে সর্পিল দু’টি সেতু দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ। সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে গিয়েছে সেতুর ছবিও। এই সড়ক পথ চুইখিম, লোলেগাঁও দিয়ে গিয়েছে। কাজেই তা ঘিরে পর্যটনের নতুন সার্কিট তৈরি হবে বলে আশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের। পর্যটন ব্যবসায়ীদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠনের মুখপাত্র সম্রাট সান্যাল বলেন, “এই সড়কপথে সবচেয়ে লাভবান হবে ডামডিম, মালবাজার অর্থাৎ ডুয়ার্স। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নতুন সড়ক দিয়ে পর্যটকেরা চুইখিম, লোলেগাঁও, লাভায় সহজেই পৌঁছে যাবেন। ডুয়ার্স, কালিম্পং, সিকিম নিয়ে নতুন পর্যটন সার্কিট হবে।”
সেই সঙ্গে সম্রাটের সর্তকবার্তা, “সড়কের নির্মাণকাজ কিন্তু এখনও শেষ হয়নি, যাঁরা গাড়ি নিয়ে যাবেন, খুব সাবধানে চালাতে হবে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy