সূচনা: ফ্লাই-অ্যাষ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র
সরকারি উদ্যোগে উত্তরবঙ্গে প্রথম পরিবেশবান্ধব ফ্লাই-অ্যাশের ইট উত্পাদন শুরু হল মালদহে। জেলার ইংরেজবাজার ব্লকের নরহট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতবসন্ত গ্রামে একশো দিনের কাজের প্রকল্প ও রাজ্য চতুর্থ অর্থ কমিশনের অর্থে এই ইট কারখানা চালু হল। বৃহস্পতিবার কারখানার উদ্বোধন করেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার। প্রাথমিক ভাবে জেলায় বাংলা আবাস যোজনা, গীতাঞ্জলি, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজে এ বার থেকে পোড়া মাটির ইটের বদলে এই ফ্লাই-অ্যাশের ইট ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই ইট কারখানা নরহট্টা গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষই পরিচালনা করবে এবং তাঁদের স্বনির্ভরতা আনতে আগামী এক বছর কারখানায় নিযুক্ত শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া হবে একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকে। পরবর্তীতে গ্রাম পঞ্চায়েতই ইট বিক্রি করে কারখানা চালাবে।
নরহট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতবসন্ত গ্রামে ফ্লাই-অ্যাশ ইট কারখানার জন্য চতুর্দশ অর্থ কমিশন ও একশো দিনের কাজের প্রকল্প দফতর থেকে ৩১ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর কারখানার শিলান্যাস করেছিলেন তত্কালীন জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী। সাত মাসের মধ্যেই সেই কারখানা এ দিন চালু করা হল। সেখানে এখন ইট তৈরির একটিই মেশিন বসেছে, পরবর্তীতে আরও মেশিন বসবে। এ দিন কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দিব্যেন্দুবাবুর পাশাপাশি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র, জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, সহকারি সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল প্রমুখ ছিলেন।
জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সুকান্ত সাহা বলেন, ‘‘এই কারখানার জন্য যত ফ্লাই-অ্যাশ লাগবে, তা নিখরচায় সরবরাহ করবে ফরাক্কার এনটিপিসি। তবে সেই ফ্লাই-অ্যাশ ফরাক্কা থেকে বহন করে নিয়ে আসতে হবে।’’ বাজারে যে পোড়া মাটির ইট পাওয়া যায় তার দাম প্রতি পিস অন্তত ১০ টাকা, সেখানে এই ফ্লাই-অ্যাশের ইটের দাম পড়বে মাত্র সাড়ে চার টাকা। এই ইট নোনা ধরে না, আগুন প্রতিরোধকারী। সর্বোপরি এই ইট পরিবেশবান্ধব। এই ইট তৈরিতে চলতি ইট ভাটার মতো ধোঁয়া দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মেশিনে এই ইট তৈরি হবে। ইংরাজবাজারের বিডিও দেবর্ষি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মেশিনে বছরে চার লক্ষ ইট উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। একশো দিনের কাজের প্রকল্পের জবকার্ডধারীরা ইট তৈরির কাজ করবেন এবং তাঁদের মজুরি এক বছর ওই প্রকল্প থেকেই দেওয়া হবে।’’ পরবর্তীতে তা গ্রাম পঞ্চায়েত বহন করবে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান সফিকুল হক। এদিকে দিব্যেন্দুবাবু বলেন, দক্ষিণবঙ্গে কয়েকটি ফ্লাই-অ্যাশের ইট কারখানা সরকারিভাবে চালু করা হয়েছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গে এই প্রথম কোনও ফ্লাই-অ্যাশের কারখানা সরকারিভাবে চালু করা হল। পরিবেশবান্ধব এই কারখানার ইট সরকারি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও সাধারণ মানুষের কাছেও বিক্রি হবে। কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘এই ইট তৈরিতে ধোঁয়ার কোনও ব্যাপার নেই। ফলে পুরোটাই পরিবেশের সহায়ক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy