Advertisement
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Malda Flood Situation

নাজিরপুর নদীবাঁধে ফাটল, নতুন করে আতঙ্কে মানিকচকের বিস্তীর্ণ এলাকা, বিপদ এড়াতে সজাগ হল প্রশাসন

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে নদীপথে চলাচলে নিয়ন্ত্রণ শুরু করল মানিকচকের পুলিশ প্রশাসন। দুর্ঘটনা এড়াতে বেঁধে দেওয়া হল নৌকার যাত্রীসংখ্যা। তদারকিতে পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারেরা।

জলমগ্ন মালদহ।

জলমগ্ন মালদহ। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মানিকচক শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৫
Share: Save:

বিহারে ভারী বৃষ্টির কারণে জলস্তর আরও বাড়তে চলেছে গঙ্গায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সজাগ প্রশাসন। এ দিকে গঙ্গা নদী ফুলেফেঁপে ওঠার আগেই নতুন করে ফাটল দেখা দিল ফুলহার নদীর বাঁধে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টির ফলে প্রায় সাতটি স্থানে ফাটল ধরেছে ফুলহারের নাজিরপুর বাঁধে। দুই জায়গায় ধসে পড়েছে বাঁধের একাংশ। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে।

আশঙ্কা, ফুলহার নদীতে জল বাড়লে প্লাবিত হতে পারে নাজিরপুর, মথুরাপুর সহ মানিকচকের বিস্তীর্ণ এলাকা। নাজিরপুরের বাসিন্দা অমিত মণ্ডল বলছেন, ‘‘বাঁধ দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার হয়নি, তাই এই অবস্থা। এখন প্রবল বৃষ্টির ফলে বাঁধের যেখানে সেখানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। কোশী নদীর জল ঢুকলে ভাঙতে পারে বাঁধ। তৈরি হতে পারে ভুতনির চরের মতো বন্যা পরিস্থিতি।’’ বিজেপির মালদা দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌড়চন্দ্র মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘গত কয়েক দশকে এই বাঁধের মেরামতিই হয়নি। বাঁধে ফাটল দেখা গেলেও হেলদোল নেই প্রশাসনের। যদি বাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তার জন্য দায়ী থাকবে সেচ দফতর।’’ যদিও এ বিষয়ে বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলছেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। দফতরকে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

বিগত দেড় মাস ধরেই গঙ্গার জলে প্লাবিত হয়ে রয়েছে মালদহের মানিকচকের ভুতনির চরের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত। সড়কপথে যাতায়াত বন্ধ। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম বলতে ভরসা নৌকাই। নৌকায় পারাপার করতে গিয়ে বার বার ঘটছে দুর্ঘটনাও। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে নদীপথে চলাচলে নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। শনিবার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ভুতনির চরের বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেখানে নৌকাডুবির খবর মেলে। নৌকায় থাকা পাঁচ জনের মধ্যে অন্তত তিন জন তলিয়ে যান। শুক্রবারও প্লাবিত ভুতনি চরে তলিয়ে যান এক জন। এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসাবে পৃথক পৃথক দুর্ঘটনায় মোট ন’জন জলে তলিয়ে গিয়েছেন। তাই এ বার দুর্ঘটনা এড়াতে মার্কিং শুরু করেছে প্রশাসন। বেঁধে দেওয়া হয়েছে নৌকার যাত্রীর সংখ্যা। যাতে নৌকায় নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রীর বেশি কেউ না ওঠেন, তার তদারকিতে রয়েছেন পুলিশ এবং সিভিক ভলেন্টিয়ারেরা। ভুতনি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার নৌকাগুলির গায়ে রং-তুলি দিয়ে সর্বাধিক যাত্রীসংখ্যা লিখে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে মাইকিং। কোন নৌকা কোন এলাকায় যাবে, তার সিরিয়াল নম্বর এবং সর্বাধিক কত জন যাত্রী নেওয়া হবে তা উল্লেখ করা হচ্ছে। এই কাজের তদারকি করছেন পুলিশ এবং ব্লক প্রশাসন আধিকারিকেরা। মাঝি অনিল মণ্ডল বলছেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশ, বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না। আমরা প্রশাসনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সংখ্যা অনুযায়ী যাত্রী নিয়েই নৌকা পারাপার করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malda Flood Situation manikchak
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE