বানার হাটের হাতি নালার জলে বিধস্ত রেল লাই বসর বাড়ি, স্কুল সড়ক উদ্ধারে এন ডি আর এফ। —নিজস্ব চিত্র।
চলছে টানা বৃষ্টি। বাড়ছে নদীর জল। আর তাতেই উত্তরবঙ্গের দুই জেলা আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জলপাইগুড়ির কিছু এলাকাতেও একই পরিস্থিতি। সব থেকে খারাপ অবস্থা বানারহাটের। বহু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। এর জেরে প্রায় ১১ ঘণ্টা ধরে ডুয়ার্সের রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে এনডিআরএফকেl এ ছাড়া মালবাজার, ক্রান্তি ও কোচবিহারেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোচবিহারে মানসাই নদীতে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়ে হয়েছে। শীতলকুচির ভাওয়ের থানা পঞ্চায়েতে মানসাইয়ের জলের তোড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাতভর ভুটান পাহাড় ও ডুয়ার্স জুড়ে ভারী বৃষ্টিতে হাতিনালার জল উপচে বানারহাট সহ বিন্নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার জলমগ্ন হয়েছে। জলের স্রোতে বানারহাট স্টেশন এলাকার রেললাইনে ধস নেমে যায়। তাতে রবিবার রাত ১২টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে ডুয়ার্স রুটে। বানারহাটের ভারত-ভুটান সড়ক, রাজ্য সড়ক, এলআরপি মোড়ের জাতীয় সড়ক রাতে নদীর চেহারা নেয়। বানারহাট হাসপাতাল, বাজার, ক্ষুদিরাম পল্লি, মহাবীর বস্তি, বানারহাট ১ ও ২ কলোনি এলাকা, বিন্নাগুড়ির এসএম কলোনি, নেতাজি পাড়া রবিবার রাত থেকে জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। বানারহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বানারহাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুবীর দাস বলেন, “পুজোর মুখে ব্যবসায়ীদের প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।” সোমবার এলাকায় গিয়েছেন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। ঘটনাস্থলে যান রেল কর্তারাও। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার অমরজিৎ গৌতম বলেন, “মুষলধারে বৃষ্টির কারণে এই ক্ষতি। ডুয়ার্স রুটে ট্রেনগুলিকে ধীর গতিতে চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এ দিকে প্রবল বৃষ্টিতে মালবাজারের নিদান চা বাগানের সড়কের তিনটি সেতু লাগোয়া সংযোগকারী রাস্তা সম্পূর্ণ উড়ে গিয়েছে। সেতু তিনটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে নিলাম চা বাগান বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়। বাগানটিতে ৫ হাজারেরও বেশি চা শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা বসবাস করেন। রাঙ্গামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রোহিত চিক বড়াইক এ দিন এলাকা পরিদর্শন করে অবিলম্বে মালবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
রবিবার রাতের বৃষ্টিতে ধরলা নদীর জল ঢুকে প্রায় ১৫০ বিঘা আমন ধানের চারা জলের তলায় ডুবে থাকায় ক্ষতির সম্মুখীন ক্রান্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের চিকন মাটিটুম এলাকার চাষিরা। চাষীদের অভিযোগ, নদী বাঁধের ওপর স্লুইস গেট তৈরি না হওয়ায় বর্ষায় প্রতিবছরই তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। বিডিও প্রবীর কুমার সিংহ বলেন, “সমস্যা সমাধানে বিষয়টি সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে।”
একনাগাড়ে বৃষ্টির ফলে ফের জলমগ্ন কালচিনি ব্লকের হ্যামিল্টনগঞ্জের একাধিক এলাকা। রবিবার হ্যামিল্টনগঞ্জের সুভাষপল্লী, নেতাজিপল্লী সহ আলিপুরদুয়ারগামী প্রধান সড়কও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া কালচিনির স্টেশন লাইন, মোদি লাইন, শান্তি কলোনি, গুদাম লাইন জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
কোচবিহারের বৃষ্টি থেমে গিয়েছিল রাতেই। কিন্তু ভুটান পাহাড়ের টানা বৃষ্টিতে জল বাড়তে শুরু করে তোর্সা নদীতে। জলের তোড়ে ফাঁসির ঘটে বাঁশের সাকো ভেঙে পড়ে। নৌকা চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়। অসংরক্ষিত এলাকায় বেশ কিছু নিচু বাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে। কোচবিহারের মহকুমাশাসক রাকিবুর রহমান বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রয়েছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” মাথাভাঙায় মানসাই নদী সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকায় জল ঢুকে গিয়েছে। মাথাভাঙা শহরের ২ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডেও জল ঢুকে পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy