পুড়ে গিয়েছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
পুজোর মুখে গৃহহীন হল কালচিনি মোদি লাইনের ১৪টি পরিবার। পুড়ে ছাই হয়েছে তাঁদের সকলের ঘর। বর্তমানে কালচিনির এক ধর্মশালায় আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। শনিবার সন্ধ্যায় এলকার বাসিন্দা হরিচন্দ্র দাসের বাড়িতে প্রথমে আগুন লাগে। এর পরে ধীরে ধীরে সেই আগুন পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পুড়ে যায় ১৪টি বাড়ি।
সামনেই বোনের বিয়ে, তাই সম্প্রতি গয়না কিনে বাড়িতেই রেখেছিলেন এলাকার বাসিন্দা গুড্ডু চৌধুরী। বাড়ি তৈরির জন্যকয়েক বছরে সাড়ে চার লক্ষ টাকাও জমিয়েছিলেন। আগুনের গ্রাসে সে সবই শেষ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছিল না পরিবারটি। রবিবার পুড়ে যাওয় ঘরে কিছু অবশিষ্ট রয়েছে কিনা, খুঁজতে দেখা যায় তাঁদের। স্থানীয়দের কথায়, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন তাঁরা আগে কখনও হননি। ঘিঞ্জি এলাকা ও অধিকাংশই কাঠের বাড়ি হওয়ায় কম সময়ে পর পর সমস্ত বাড়িতে আগুন লেগে যায়। তা দেখে প্রাণ বাঁচাতে ছুটতে থাকেন বাসিন্দারা। কেউ পরিবার নিয়ে এলাকার মন্দিরে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হাসিমারা দমকল বিভাগ, এয়ারফোর্সের দমকল, জয়গাঁ দমকল বিভাগের ৬টি গাড়ি। এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় শেষমেশ প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। মোদি লাইনের পাশেই রয়েছে রেল লাইন। সেখানে ভিড় জমান অনেকে। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের তরফে রেলকে বলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসা পর্যন্ত রেল পরিষেবাও বন্ধ করা হয়েছিল।
দমকল সূত্রে খবর, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। এর পরে ঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারগুলি ফেটে যাওয়ায় আগুন আরও ভয়াবহ আকার নেয়।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গুড্ডু চোধুরী বলেন, ‘‘এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই হাট ব্যবসায়ী। হাটে থাকাকালীন খবর পাই বাড়িতে আগুন লেগেছে। ছুটে এসে দেখি সব শেষ। বোনের বিয়ের গয়না, বাড়ি বানানোর টাকা কিছুই নেই।’’ আর এক বাসিন্দা রামচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘ঘরের কিছু বাঁচাতে পারলাম না। কোনও মতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছি। ঘরের সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।’’
রবিবার সকালে এলাকায় এসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা, ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা এবং তৃণমূল জেলা ও ব্লকের নেতারা। বার্লা বলেন, ‘‘এই সময়ে জেলা ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে মিলে আমাদের কাজ করা উচিত। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলবো।’’
এ দিন ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে ব্লক প্রশাসনের তরফে টিন ও বাসনপত্র দেওয়া হয়। কালচিনি বিডিও প্রশান্ত বর্মণ জানান, প্রশাসন সকলের পাশে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সকলকে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। যাঁরা আশ্রয়হীন, তাঁদের আপাতত কালচিনি ধর্মশালায় রাখা হয়েছে, খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy