হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যাত্রাণের টাকা লুঠে মামলা রুজু। —নিজস্ব চিত্র।
জলঘোলা হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। এ বার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যাত্রাণের টাকা তছনছের অভিযোগে মামলা দায়ের হল তৃণমূল এবং কংগ্রেসের তিন নেত্রীর বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৭ সালে হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যাত্রাণের টাকা তাঁরা ভুয়ো তালিকা এবং ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। ওই চক্রে শাসক তৃণমূল তো বটেই, তৎকালীন বিরোধী দলে থাকা এক নেত্রীও শামিল ছিলেন বলে অভিযোগ।
তৃণমূলের দখলে থাকা হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কোয়েল দাস, শিশু এবং নারীকল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ রোশেনারা খাতুন এবং তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী কংগ্রেসের সুজাতা সাহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। যদিও সুজাতা পরে তৃণমূলে যোগ দেন। ওই ঘটনা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা আব্দুল মান্নান। তিনি বর্তমানে ওই পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা। সোমবার মান্নান বলেন, ‘‘২০১৭ সালে বন্যা হয়েছিল। সেই সময় ৭ হাজার ৩০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। তাঁদের ২০১৯ সালে টাকা দেওয়া হয়েছিল ঘর তৈরির জন্য। কিন্তু অনেকে টাকা পাননি। তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন বিডিও-র কাছে। ওরা টাকা লুঠপাট করেছে। যাঁরা টাকা পাননি তাঁদের টাকা দিতে হবে। এর পাশাপাশি যাঁরা চুরি করেছেন তাঁদেরও বিচার করতে হবে।’’
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষের সুর বিজেপি-র গলায়। বিজেপি নেতা ভূপেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি কোয়েল দাসের নেতৃত্বে টাকা তছনছ হয়েছে। প্রশাসনিক ভাবে মামলা হয়েছে। জামিন অযোগ্য ধারা রুজু হয়েছে। গরিবের টাকা কী করে লুঠ হল?’’ এ নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। এটা হাই কোর্টের নির্দেশে হয়েছে। দল দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। আইন আইনের পথে চলবে। দল এ ব্যাপারে নাক গলাবে না।’’
বিষয়টি নিয়ে কোয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া গিয়েছে। এ নিয়ে চাঁচলের মহকুমাশাসক কল্লোল রায় বলেন, ‘‘তদন্তের পর প্রশাসনের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বাকিটা পুলিশ দেখবে।’’ চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনমাফিক পদক্ষেপ করা হবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যা হয়। তার জেরে অনেকেরই ঘরবাড়ি আংশিক এবং সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর রাজ্য সরকারের তরফে আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৭০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই টাকা পাননি বলে তাঁরা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু দিন আগেই মালদহের বড়ই এলাকার মোবারকপুর অঞ্চল থেকে শাসকদলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় আরও চার ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তকে। তাঁদের প্রত্যেকের নামে মামলা রুজু করা হয়েছে। এই পর্বেই বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামণি সাহার বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেন হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু। যদিও সোনামণি এখনও পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy