প্রতীকী ছবি।
মালদহে এ বার আমন ধানের চাষের এলাকা বেড়েছে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, জেলায় ধান উঠবে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া থাকায় জেলায় ধানের রেকর্ড ফলনের সম্ভাবনা আছে।
এ দিকে, জেলায় যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয় তার সামান্য অংশই কেনে সরকার। বাকিটা খোলা বাজারেই বিক্রি হয়। অভিযোগ, সেখানে ফড়ে-রাজ সক্রিয়। তার জেরে কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য পান না। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি আইনের জেরে সহায়ক মূল্য তুলে দিলে কৃষকেরা আদৌ ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কৃষকদের মধ্যেই।
পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, জেলার ধানচাষিরা প্রায় ‘দিন আনি দিন খাই’ করে চাষ করেন। তাঁদের ছোট ছোট জমি। তাঁদের কাছ থেকে কোন কর্পোরেট সংস্থা শস্য কিনবে? ফলে নয়া কৃষি আইন নিয়ে জেলার ধান চাষিদের চিন্তা বেড়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মালদহ জেলায় গত বছর ১ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। ফলন হয়েছিল প্রায় ৬ লক্ষ মেট্রিক টন। এ বার জেলায় আমন ধান চাষের এলাকা বেড়ে হয়েছে দেড় লক্ষ হাজার হেক্টর। কৃষি দফতরের আশা, এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া আমন ধান চাষের অনুকূলে থাকায় জেলায় প্রায় ৭ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর সরকারি ভাবে জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লক্ষ ৭৪ হাজার মেট্রিক টন। কেনা হয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার ৬২২ মেট্রিক টন। এ বার ২ লক্ষ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অক্টোবর মাস থেকে ধান কেনার জন্য কৃষকদের রেজিস্ট্রেশন করা শুরু হবে। ফলে জেলায় উৎপাদিত বেশিরভাগ ধান খোলা বাজারে বিক্রির সম্ভাবনাই বেশি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
কৃষকদের আশঙ্কা, নয়া কৃষি আইনে সহায়ক মূল্য যদি তুলে দেওয়া হয় এবং সরকার যদি ধান না কেনে তবে খোলা বাজারে ধানের দাম এক লাফে অনেকটাই নেমে যাবে। এই সুযোগে ফড়েরাজ আরও বেশি জাঁকিয়ে বসবে।
গাজলের আলালের ধানচাষি নরেন সরকার বলেন, “বাজারের উপর যদি সরকারি নিয়ন্ত্রণ না থাকে তবে ফড়ে-রাজ বাড়বে। কর্পোরেট সংস্থা কখনওই নিজেদের লাভ ছাড়া অন্য কারও কথা চিন্তা করবে না। এর পাশাপাশি খাদ্যশস্য মজুতের অবাধ সুযোগ করে দেওয়ায় কালোবাজারি হবে। চাষিরা কিন্তু ক্ষতির মুখে পড়বেন।” বামনগোলার এক ধান চাষি হেরম্ব বিশ্বাস বলেন, “আমি মাত্র চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। বছরভর খাবারের ধান বাড়িতে মজুত রেখে বাকি অংশটুকু সহায়ক মূল্য সরকারের কাছে বিক্রি করি। আমার না আছে স্মার্টফোন না আছে, না আছে ইন্টারনেট। ফলে সামান্য ধান বিক্রির জন্য কর্পোরেট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করব কী ভাবে? সরকার যদি সহায়ক মূল্যে ধান না কেনে তবে ফড়েদের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করতে হবে।” জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, নয়া কৃষি আইনের সব পড়া হয়ে ওঠেনি। তবে যেটুকু জানা গেল তাতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা সঙ্কটে পড়তে পারেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy