বিক্রি: ধান কেনাবেচা চলছে বালুরঘাটের কিসানমান্ডিতে। নিজস্ব চিত্র
জেলায় যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়েছে তার ‘সামান্য’ পরিমাণ ধানই কিনেছে খাদ্য দফতর। ফলে বিপুল পরিমাণে ধান ফড়ের কাছে জেলার চাষিরা বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই খাদ্য দফতর ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ছুঁয়ে ফেলায় ক্যাম্প করে ধান কেনাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ‘গোলায়’ পড়ে থাকা অবশিষ্ট ধান ফড়ের কাছে বিক্রি করতে হবে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। তাই গত বছরের তুলনায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হলেও তাতে খুব একটা লাভ হয়নি বলে দাবি জেলার চাষিদের।
দক্ষিণ দিনাজপুরে এ বছর প্রায় সাড়ে আট লক্ষ মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদন হয়েছে। বাৎসরিক গড় উৎপাদনের তুলনায় এ বছর উৎপাদন বেশি হওয়ায় গত বারের তুলনায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রাও বেশি নেয় খাদ্য দফতর। তারা জানিয়েছে, গত বছর খাদ্য দফতর প্রায় ৫৬ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনেছিল। এ বছর সেই লক্ষ্যমাত্র বাড়িয়ে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দফতর ৭১ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনেও ফেলেছে। বাকিটা কিছু দিনের মধ্যেই কেনা হবে বলে দফতর সূত্রে খবর৷ কিন্তু এই পরিমাণ ধান কিনলেও বাকি ধান চাষিরা কোথায় বিক্রি করবেন তার উত্তর নেই প্রশাসনের কাছে। চাষি নিজের চাহিদার জন্য ধান রেখে দিলেও জেলায় প্রায় চার লক্ষ মেট্রিক টন ধান উদ্বৃত্ত থেকে যাবে। বাধ্য হয়েই সেই ধান ফড়ের কাছে বিক্রি করতে হবে চাষিকে। আর তাতেই লোকসানে পড়ছেন চাষিরা। কারণ, সরকারি সহায়ক মূল্য যেখানে ১৮৩৫ টাকা প্রতি কুইন্টাল, সেখানে খোলা বাজারে ধানের দাম ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকায় আটকে রয়েছে। জেলার চাষিদের দাবি, ‘‘অতিরিক্ত ধান বিক্রি করতে খোলা বাজারের উপরেই ভরসা করতে হয়৷ তখন দাম কমে যাওয়ায় লোকসানে পড়তে হয়।’’ খাদ্য দফতর অবশ্য জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য প্রত্যেক চাষির কাছ থেকে ধান কেনা। দফতরের আরও দাবি, বেশি ধান কিনলে গুদামে থেকে সেই ধানের চাল নষ্ট হবে। দফতর জানিয়েছে, জেলার প্রায় ৩০ হাজার চাষি ধান বিক্রির জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন৷ এখনও ২৯ হাজার চাষির থেকে ধান কেনাও হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, চাল নষ্ট হওয়ার ভয়ে প্রশাসন লোকসান করতে রাজি নয় বলেই কি গরিব চাষিকে শেষে লোকসানে ফেলা হচ্ছে? যদিও এই প্রশ্নের কোনও জবাব দেয়নি প্রশাসন৷ জেলার খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘জেলায় রেশনের জন্য প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন ধান দরকার। সেখানে আমরা ৭৫ হাজার মেট্রিক টন কিনছি। আমরা সব চাষির কাছ থেকে ধান কেনার লক্ষ্যে পৌঁছেছি।’’ তবে দফতর ধান কেনার লক্ষ্যে পৌঁছলেও চাষিদের একটা বড় অংশই ধান বিক্রির লক্ষ্যে পৌঁছননি বলে অভিযোগ থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy