মঙ্গলবার সকালে নির্যাতিতাকে ভর্তি করানো হয় গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে।
পাটকাঠির বেড়ার ফাঁক দিয়ে আলো এসে পড়েছে। শুক্রবার বিকেলে সে দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের ‘নির্যাতিতার’ স্বামী। চোখে অসহায়তা। দম্পতির নাবালিকা মেয়েও বাকরুদ্ধ। শুধু দু’গাল বেয়ে জল ঝরছে। মহিলারা উঠোনে বসে কাঁদছেন। বয়স্ক এক জন বলেন, ‘‘ভাইপো চলা ফেরা করতে পারে না। আয়, সংসার সব কিছুই সামলাত ওর বৌ। ওরা কেন ওকে এ ভাবে মেরে ফেলল? এক বারও ভাবল না!’’
সোমবার সন্ধেয় ছিল এক আত্মীয়ের বিয়ে। পুলিশের দাবি, মৃত্যুর আগে, নির্যাতিতা বয়ানে তাদের জানিয়েছেন, রাস্তা থেকে পরিচিত দুই অভিযুক্ত তাঁকে জোর করে ভুট্টা খেতের ভিতরে টেনে নিয়ে যায়। তাদের সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিল। ধর্ষণের আগে, ওই বধূকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। রাতে ওই মাঠেরই পাশে একটি বাড়ির উঠোনে ওই বধূকে ফেলে চলে যায় অভিযুক্তেরা। ওই বাড়ির লোকজনও গিয়েছিলেন বিয়ে বাড়িতে। রাত ৯টা নাগাদ তাঁরা বাড়ি ফিরে ওই বধূকে অসাড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখে, বাড়িতে খবর দেন। হালকা জ্ঞান ফেরে নির্যাতিতার। রাতেই তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার নির্যাতিতাকে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার মারা যান ওই বধূ।
ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত দু’জনের বাড়ি পাশাপাশি। সেখানে গিয়ে এ দিন দেখা গেল, দু’টি বাড়িই তালাবন্ধ। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে ওই দু’জন সপরিবার এলাকা ছেড়েছে। তাদের বাড়ি থেকে ‘হামলার’ জায়গা বড় জোর আধ কিলোমিটার দূরত্বে। সেখানে রাস্তার পাশে ভুট্টা খেত। কোমর সমান উঁচু গাছ রয়েছে।
অভিযুক্ত দু’জনই চাষের কাজে যুক্ত। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে চাপান-উতোর চলছে। সিপিএম নেতা অচিন্ত্য চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকজনই এমন অমানবিক, পৈশাচিক কাজ করেছে। আমাদের মহিলা কর্মীরা তাঁকে দেখতেও গিয়েছিলেন। নিন্দার ভাষা নেই৷ দোষীদের চরম শাস্তি দাবি করছি।’’
তৃণমূলের নেতা সন্তু রায় বলেন, ‘‘প্রধান অভিযুক্ত দু’জনই আমাদের দলের কর্মী। যা ঘটেছে, তাতে চাইব, আইনি ভাবে ব্যবস্থা হোক।’’ যদিও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওরা তৃণমূলের নয়। ওরা ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি করে।’’ ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির উত্তরবঙ্গ জ়োনের সভাপতি বিভূতি টুডু বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় ওই এলাকায় আমাদের কিছু সমর্থক ছিল। কিন্তু পরে, সবাই দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy