Advertisement
১১ জানুয়ারি ২০২৫
Russia Ukraine War

Russia-Ukraine war: দেশে ফিরেও ‘ড্যানিশ আঙ্কলের’ কথা ভুলতে পারছেন না উষ্ণীষ

জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ের হস্তক্ষেপে সরকারি সহযোগিতায় দেশে ফিরেছেন ইসলামপুর হাসপাতালের চিকিৎসক উজ্জ্বল রায়ের ছেলে উষ্ণীষ।

উষ্ণীষ রায়।

উষ্ণীষ রায়। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ পাল
শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২২ ০৭:৪৩
Share: Save:

চারদিকে ভারী বুটের আওয়াজ। সৈনিকের পোশাকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরছে কেউ। হঠাৎই বোমার কান ফাটানো আওয়াজ। টানা কয়েক দিন ভাড়া বাড়ির বেসমেন্ট থেকে সেই দৃশ্য সরাসরি দেখছিলেন ইসলামপুরের উষ্ণীষ। মোবাইলে িভডিয়ো গেমে এমন দৃশ্য দেখেছেন। বাস্তব জীবনে কখনও এমন পরিস্থিতি হতে পারে তা ভেবে উঠতে পারেননি তাঁরা।

জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ের হস্তক্ষেপে সরকারি সহযোগিতায় দেশে ফিরেছেন ইসলামপুর হাসপাতালের চিকিৎসক উজ্জ্বল রায়ের ছেলে উষ্ণীষ। স্বস্তি ফিরেছে পরিবারেরও। উজ্জ্বল বলেন, ‘‘করোনা কালে বাড়িতে কাটিয়ে মাত্র ৪ মাস আগে সেই দেশে গিয়েছিল ছেলে। ভেবেছিলাম যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলেও যুদ্ধ হবে না। আটকে পড়ে ছেলে। পড়ার সময় জয়ন্তদা দু’বছরের সিনিয়র ছিলেন। তখন থেকে ওঁর সঙ্গে পরিচয় ছিল। তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। সরকারও দেশে ফেরানোর যথেষ্ট উদ্যোগ নেয়।’’

উষ্ণীষ খারকিভ এর একটি মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তাঁর সঙ্গে আরও তিন জন স্থানীয় এক ড্যানিশ ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পরিবারে ওই ড্যানিশ, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান ছিলেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রথম বোমা পড়ে খারকিভে। এর পরই শুরু হয় ভয়ঙ্কর যুদ্ধ পরিস্থিতি। যুদ্ধ শুরু হতেই আরও দু’জন আসেন ওই বাড়িতে আশ্রয় নিতে। সামান্য খাবার নিয়ে তাঁরা ঢুকে পড়েন বাঙ্কারে। সেই বেসমেন্ট থেকেই কখনও বোমার আওয়াজ পেয়েছেন, কখনও সৈনিকদের অস্ত্র হাতে ঘুরতে দেখেছেন।

৬ দিন বেসমেন্টে থাকার পরে দেশ ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে এক দিন বেরোনোর চেষ্টা করেন উষ্ণীষরা। গেটে দাঁড়াতেই বোমার আওয়াজ পেয়ে ফের সেই আগের আশ্রয়ে।

পরে অবশ্য ভারতীয় দূতাবাস থেকে যখন বলা হয়েছিল দ্রুত দেশ ছাড়তে সে দিন হেঁটে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে স্টেশনে যাওয়ার জন্য রওনা দেন তাঁরা। পথেও বোমার আওয়াজ পেয়ে লুকোতে হয়েছে। ট্রেনেও উঠতে দেওয়া হচ্ছিল না। কয়েক জন ভারতীয় হাত ধরে তাঁদের টেনে তুলে নেন ট্রেনে, জানান উষ্ণীষ। প্রায় ২৬ ঘণ্টা পরে ভিড়েঠাসা ট্রেন পৌঁছয় পোল্যান্ডে। -৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁরা পৌঁছন পোল্যান্ড সীমান্তে। সেই দেশে আতিথেয়তা অতুলনীয় ছিল বলেই দাবি ওই ডাক্তারি পড়ুয়ার।

তবে দেশে ফিরেও ‘ড্যানিশ আঙ্কল’-এর কথা ভুলতে পারেননি উষ্ণীষ। ফোন করে জানতে চেয়েছেন তাঁদের বর্তমান পরিস্থিতির কথা। উষ্ণীষ বললেন, ‘‘শুনলাম ওঁরা এখন গ্রামের দিকে রয়েছেন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিজের ছেলের মতো করে আগলে রেখেছিল ওই পরিবার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Ukraine War
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy