Advertisement
E-Paper

ইতিহাসেও ঠকানো গেল না পর্ষদকে, কিউআর কোড ঝাপসা করে মাধ্যমিকের প্রশ্ন পাচার, ধরা পড়ল তিন

মাধ্যমিক শুরুর দিন বাংলা পরীক্ষা চলাকালীনই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল প্রশ্নপত্রের ছবি। ইংরেজি পরীক্ষার দিনও তার ব্যত্যয় হয়নি। সোমবার পরীক্ষা চলাকালীন প্রকাশ্যে এল ইতিহাসের প্রশ্নপত্রও।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৯
Share
Save

মাধ্যমিকের তৃতীয় দিনেও ‘ফাঁস’ হল প্রশ্নপত্র। আবারও সেই মালদহ জেলা থেকে। সোমবার ইতিহাস পরীক্ষা চলাকালীন সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল প্রশ্নপত্রের ছবি। অভিযোগ, প্রশ্নপত্রের কিউআর কোড ঝাপসা করে ছবি তুলে তা সমাজমাধ্যমে ছেড়ে দেয় তিন পরীক্ষার্থী। ওই তিন জনের সব পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলে পর্ষদ জানিয়েছে। তবে ওই পরীক্ষার্থীরা কোন স্কুলের পড়ুয়া, তা এখনও জানা যায়নি।

এর আগে মাধ্যমিক শুরুর দিন বাংলা পরীক্ষা চলাকালীনই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল প্রশ্নপত্রের ছবি। ইংরেজি পরীক্ষার দিনও তার ব্যত্যয় হয়নি। সোমবার পরীক্ষা চলাকালীন প্রকাশ্যে এল ইতিহাসের প্রশ্নপত্রও। ঘটনাচক্রে বাংলা, ইংরেজি এবং ইতিহাস— তিনটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রই পাচার হয়েছে মালদহ জেলা থেকে।

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধরা পড়ার হাত থেকে বাঁচতে কৌশল করে ইতিহাসের প্রশ্নপত্রে থাকা কিউআর কোড ঝাপসা করে ছবি তুলেছিল অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীরা। তবে লাভ হয়নি। বিশেষ কৌশলে কিউআর কোড বার করা হয়। এর পর কিউআর কোড স্ক্যান করে পর্ষদের কর্মীরা জানতে পারেন, কোন জায়গার কোন পরীক্ষার্থীর হাতে ওই প্রশ্নপত্র গিয়েছিল। কারণ, ওই কোডে যে সিরিয়াল নম্বরটি ‘এনক্রিপটেড’ রয়েছে, সেই কোড দেখেই বোঝা যায়, প্রশ্নপত্রটি কোন জেলায় গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কোন স্কুলে ওই প্রশ্নপত্র গিয়েছিল, তা-ও জানা যায় সিরিয়াল নম্বর থেকে। তার পর স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, কোন পরীক্ষার্থীর হাতে সেই প্রশ্নপত্র পড়েছিল। এর পর অভিযুক্ত ওই তিন পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে পর্ষদ। তাদের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

ইংরেজি পরীক্ষার দিনেও কৌশল করে প্রশ্নপত্রের উপর থাকা কিউআর কোড লাল কালি দিয়ে কেটে দিয়েছিল অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীরা। সেই কালি মুছে ১২ জন পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে পর্ষদ। তাদের পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল, মালদহ জেলার এনায়েতপুর হাই স্কুল। পর্ষদ সূত্রে খবর, তাদের সকলের পরীক্ষা বাতিল করা সত্ত্বেও অভিযুক্ত এক ছাত্রী ইতিহাস পরীক্ষা দিতে এসেছিল। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাকে পরীক্ষার হল থেকে বার করে দেওয়া হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা তাকে জানিয়ে দেন, যে হেতু ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তার কাছ থেকেই ফাঁস হয়েছে, তাই পরবর্তী কোনও পরীক্ষাই আর সে দিতে পারবে না। এ নিয়ে স্কুল চত্বরে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গোপালপুর হাই স্কুলের ছাত্রী ওই পরীক্ষার্থী। তার অভিযোগ, ইংরেজি পরীক্ষার দিন তল্লাশি করেই তাঁকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকানো হয়েছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁস তো দূরের কথা, সে কোনও মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকেনি বলেও তার দাবি। তবে শেষমেশ তাকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি। এনায়েতপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ বদিউজ্জামান জানিয়েছেন, পর্ষদের নির্দেশ মেনেই ইতিহাস পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি ওই পরীক্ষার্থীকে।

মাধ্যমিক শুরুর প্রথম তিন দিনেই পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের শিক্ষা মহলের একাংশ। তবে পুরো বিষয়টি চক্রান্ত বলেই মনে করছেন মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। শুধুমাত্র মালদহ জেলা থেকেই কেন এমনটা হচ্ছে তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি। ইতিহাস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পর্ষদের তরফে পরীক্ষা হলে মোবাইল নিয়ে যেতে বারণ করা হয়েছে। তল্লাশি করে ভিতরে পাঠানো হয়। তার পরেও কারও কাছে ফোন থাকলে তা জমা দিতে বলা হয়। এত কিছুর পরেও কেউ যদি মোবাইল ফোন দিয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা পাচার করে, তা হলে তার পরীক্ষা তো বাতিল হবেই।’’

মালদহের এনায়েতপুর হাই স্কুলের ওই পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে না দেওয়া নিয়ে রামানুজ বলেন, ‘‘ওই পরীক্ষার্থীকে ইংরেজি পরীক্ষার দিনেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। ওই পরীক্ষার্থীর ফোন থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল। তাই ওই পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি।’’

পর্ষদ সূত্রে খবর, এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ন’লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া। তাদের প্রত্যেকের প্রশ্নপত্রেই আলাদা আলাদা কিউআর কোড রয়েছে। কোনও কোডের সঙ্গে কোনও কোডের মিল নেই। ফলে কোন পরীক্ষার্থী কোন প্রশ্নপত্র পেয়েছে, তা পর্ষদ অফিসে বসে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। শুক্রবার মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই দেখা যায়, বাংলার একটি প্রশ্নপত্র সমাজমাধ্যমে ঘুরছে। এর পরেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে পর্ষদ। কিউআর কোড স্ক্যান করে চিহ্নিত করা হয় মালদহের দুই পরীক্ষার্থীকে। এর পর ইংরেজি এবং ইতিহাস পরীক্ষার দিনেও বিশেষ কৌশলে কিউআর কোড ঢেকে প্রশ্নপত্র পাচারের অভিযোগ উঠেছে পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গত, মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রুখতে আগের বছরগুলিতে একাধিক পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছিল পর্ষদকে। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ধাঁচে সিরিয়াল নম্বর ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার করা হয় ‘ইউনিক কিউআর কোড’-এর মাধ্যমে। এই কোড সাধারণত যে কোনও মোবাইল বা ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট ব্যবহার করে স্ক্যান করা যাবে না। বিশেষ সফ্‌টঅয়্যারের মাধ্যমে ওই তথ্য জানা যায়।

Madhyamik 2024 Madhyamik Examination 2024 History Viral

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।