সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ইংরেজি প্রশ্নপত্রের সেই ছবি। ছবি: সংগৃহীত।
মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষা চলাকালীনই শুক্রবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল প্রশ্নপত্রের ছবি। ইংরেজি পরীক্ষার দিনও তার ব্যত্যয় হল না। শনিবার ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালীনই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল প্রশ্নপত্রের ছবি। শুক্রবারের মতো শনিবারও প্রশ্নপত্র পাচার হয়েছে সেই মালদহ জেলা থেকেই।
শনিবার মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা শুরুর কিছু ক্ষণ পরেই মালদহ জেলার এনায়েতপুর হাই স্কুল থেকে ওই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায় বলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে খবর। এই ঘটনায় মোট ১২ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। পর্ষদ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, ধরা পড়ার হাত থেকে বাঁচতে কৌশল করে প্রশ্নপত্রে থাকা কিউআর কোড লাল কালি দিয়ে কেটে দিয়েছিল অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীরা। তবে তাতে লাভ হয়নি। কিউআর কোডের উপর থাকা লাল কালি মুছে ওই ১২ পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করেছে পর্ষদ। তাদের সব পরীক্ষা বাতিলও করা হয়েছে।
পর্ষদ সূত্রে খবর, এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ন’লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া। তাদের প্রত্যেকের প্রশ্নপত্রেই আলাদা আলাদা কিউআর কোড রয়েছে। কোনও কোডের সঙ্গে কোনও কোডের মিল নেই। ফলে কোন পরীক্ষার্থী কোন প্রশ্নপত্র পেয়েছে, তা পর্ষদ অফিসে বসে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। শুক্রবার মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই দেখা যায়, বাংলার একটি প্রশ্নপত্র সমাজমাধ্যমে ঘুরছে। এর পরেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে পর্ষদ। কিউআর কোড স্ক্যান করে চিহ্নিত করা হয় মালদহের দুই পরীক্ষার্থীকে। তাঁদের সম্পূর্ণ পরীক্ষা বাতিল করে মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশনও বাতিল করে দিয়েছে পর্ষদ।
শনিবার ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালীন সমাজমাধ্যমে যে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে, তাতে কিউআর কোড ছিল। মালদহের অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীরা লাল কালি দিয়ে সেই কিউআর কোড ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করলেও বিশেষ প্রযুক্তিতে তা মুছে ফেলে পর্ষদ। এর পর কিউআর কোড স্ক্যান করে পর্ষদের কর্মীরা জানতে পারেন, কোন জায়গার কোন পরীক্ষার্থীর হাতে ওই প্রশ্নপত্র পড়ে। কারণ, ওই কোডে যে সিরিয়াল নম্বরটি ‘এনক্রিপটেড’ রয়েছে, সেই কোড দেখেই বোঝা যায়, প্রশ্নপত্রটি কোন জেলায় গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কোন স্কুলে ওই প্রশ্নপত্র গিয়েছিল, তা-ও জানা যায় সিরিয়াল নম্বর থেকে। তার পর স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, কোন পরীক্ষার্থীর হাতে সেই প্রশ্নপত্র পড়েছিল।
মাধ্যমিক শুরুর প্রথম দু’দিনেই পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের শিক্ষা মহলের একাংশ। তবে পুরো বিষয়টি চক্রান্ত বলেই মনে করছেন মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘যারা এই কাজ করছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই করছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমনটা বাংলা পরীক্ষার সময়েও করা হয়েছিল। বিষয়টা আমরা খতিয়েও দেখছি। তার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব পরীক্ষার্থী মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। শুধুমাত্র মালদহ জেলা থেকেই কেন এমনটা হচ্ছে তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। কিউআর কোড মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে মানে স্পষ্ট যে, সচেতন ভাবেই করছে। এটা স্বাভাবিক নয়। মনে হয় বড় চক্রান্ত চলছে।’’
প্রসঙ্গত, মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রুখতে আগের বছরগুলিতে একাধিক পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছিল পর্ষদকে। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ধাঁচে সিরিয়াল নম্বর ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার করা হয় ‘ইউনিক কিউআর কোড’-এর মাধ্যমে। এই কোড সাধারণত যে কোনও মোবাইল বা ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট ব্যবহার করে স্ক্যান করা যাবে না। বিশেষ সফ্টঅয়্যারের মাধ্যমে ওই তথ্য জানা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy