হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্ত সামিনা বিবির শ্রমিক আবাসন। নিজস্ব চিত্র।
শীতের রাতে কালচিনির বন্ধ দলসিংপাড়া চা বাগানে সামিনা বিবির ঘরের পাকা দেওয়াল গুঁড়িয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে হাতি। এ দিকে, ঘরে যে হাতি ঢুকেছে, তা টের পায়নি সামিনা বিবির ঘুমন্ত ছেলে। ভাঙা দেওয়ালের একাংশ গিয়ে পড়ে সোহেলের উপরে। চুন-সুড়কির স্তূপের তলায় চাপা পড়ে পালানোর পথ ছিল না সোহেলের সামনে। কয়েক পা দূরে দাঁড়িয়ে তখন সাক্ষাৎ যমদূত! উপায় না দেখে হাতির চোখে সরাসরি মোবাইল টর্চের আলো ফেলেন সামিনা। তাতেই হঠাৎ চমকে ওঠে হাতিটি। পিছিয়ে আসে কয়েক পা। সেই সুযোগে কোনও মতে ছেলেকে টেনে বার করে এনে ছুটে পালান সামিনা।
আঘাত লাগলেও, সোহেল জানান এ যাত্রায় মায়ের জন্যই প্রাণে বেঁচেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘‘মা সেই সময়ে বুদ্ধি করে হাতির চোখে আলো না ফেললে, ও আমাকে ওখানেই মেরে ফেলত। দেওয়াল ভেঙে বুকে-হাতে চোট লেগেছে একটু। তবে প্রাণ যে বেঁচেছে, এই অনেক।’’ বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনার কথা মনে করে থেকে-থেকে শিউরে উঠছেন সামিরা। তিনি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে কী করবো বুঝতে না পেরে হাতির চোখে মোবাইলের টর্চের আলো ফেলি। হাতিটা থতমত খেয়ে পিছিয়ে গেলে ছেলেকে কোনও মতে টেনে বার করে দৌড় মারি।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, এর পরে হাতিটি চলে যায় দলসিংপাড়া জটুলাইন এলাকায়। সেখানেও একটি বাড়ি ভাঙচুর করে হাতিটি। পরে সেটি নিজেই জঙ্গলে ফিরে যায়। এই দলসিংপাড়া চা বাগানের এক দিকে বক্সা ও জলদাপাড়া জঙ্গল থাকায় হাতির হানা লেগেই থাকে। বন দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ভোররাতের মতো বুধবার মধ্যরাতেও প্রায় ২৫টি হাতির একটি দল ওই এলাকায় হানা দিয়েছিল। তবে সেগুলি তছনছ চালানোর আগেই হাতির পালটিকে জঙ্গলে ফিরিয়ে নিয়ে যায় বন কর্মীরা। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের
অভিযোগ, কয়েক ঘণ্টা পরে আবার অন্য একটি হাতি এসে তাণ্ডব চালায় সেখানে।
পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেও দলসিংপাড়া চা বাগানের ওই এলাকা লাগোয়া জঙ্গলে একটি হাতির আনাগোনা লক্ষ্য করা যায় বলে বন দফতর সূত্রে খবর। তবে সেটি যাতে এলাকায় না ঢুকে পরে, তার জন্য এ দিন রাত পর্যন্ত নজরদারি চালান জলদাপাড়া বন বিভাগের কর্মীরা। এ বিষয়ে জলদাপাড়া সহকারী বন্যপ্রাণ সংরক্ষক নভোজিত দে বলেন, ‘‘কোনও বিপজ্জনক ঘটনা এড়াতে আমরা নিয়মিত টহলদারি চালাচ্ছি। এ দিনও আমাদের দল সকাল থেকে সেখানে ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy