করোনা-আবহে এ বারের পুজো ছিল অন্যরকম। পঞ্চমী থেকে সপ্তমী, গৌড়বঙ্গের তিন জেলায় মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় ছিল না বললেই চলে। কিন্তু অষ্টমী ও নবমীতে স্বাস্থ্যবিধি কার্যত উড়িয়ে রাস্তায় নামল মানুষের ঢল। প্রতিমা রেখে দেওয়ায় একাদশীতেও অনেকে প্রতিমা দর্শন করেন। অভিযোগ, অনেকের ছিল না মাস্ক, মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ববিধিও। বিসর্জনেও উঠল বিধিভঙ্গের অভিযোগ। এতে চিন্তায় স্বাস্থ্যকর্তারা। এমন অসচেতনতায় করোনার হার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
মালদহ
মালদহ জেলার করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। সোমবারও নতুন করে জেলায় ৫৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেই বসলেন, "পুজোয় প্রতিমা দর্শনে শহরের বেশিরভাগ মানুষকেই মাস্ক পরতে দেখা গেলেও, গ্রামের দিকে মাস্ক ছাড়াই অনেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন। শহর বা গ্রামে অনেকেই তোয়াক্কা করেননি সামাজিক দূরত্বেরও।" জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, "জেলায় করোনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়াচ্ছি।" মঙ্গলবারও ইংরেজবাজার শহরের মিশনঘাট, ঘোসাইঘাট, নিমাইসরা ঘাট, কোঠাবাড়ি ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। সেখানেও ছিল ভিড়।
রায়গঞ্জ
সংক্রমণ রুখতে বিসর্জনে এ বছর শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছিল রায়গঞ্জ পুরসভা। পাশাপাশি, প্রতিমা বিসর্জন প্রক্রিয়ায় ১০ জন বাসিন্দার বেশি অংশ নেওয়া যাবে না বলেও জানানো হয়। রবিবার, নবমীর সকাল থেকে মাইকযোগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় সেই নিষেধাজ্ঞার কথা প্রচারও করে পুরসভা। কিন্তু সোম ও মঙ্গলবার রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা বিসর্জনে উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, শহরের একাধিক পুজো কমিটি ১০ জনের অনেক বেশি লোক নিয়ে
শোভাযাত্রা করে শহরের খরমুজাঘাট ও বন্দরঘাটের কুলিক নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছে। শোভাযাত্রায় অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না। বিসর্জন দেখতে দুটি নদীঘাটে ভিড় জমানো বাসিন্দাদের অনেকেরই মুখে মাস্ক ছিল না। পুরসভার তরফে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার জন্য ঘাট সহায়ক রাখা হয়েছিল, তাঁদেরও অনেকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি।
পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, “ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক।’’ রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমার বলেন, “বাসিন্দারা সচেতন না হলে পুলিশের পক্ষে অভিযান চালিয়ে সংক্রমণ ছড়ানো রোখা সম্ভব নয়।
বালুরঘাট
বিসর্জনে প্রতি বার বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদীর সদরঘাটের মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ হয়। এ বার সেই মেলা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসন সক্ষম হলেও রাস্তার ভিড় ঠেকানো যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করে নমুনা পরীক্ষার গতি বাড়ানোর দাবি উঠছে। শহরের বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, ষষ্ঠী থেকে অষ্টমী—তিন দিন সংযমের পরে নবমী ও দশমীতে শহরের বড় পুজোমণ্ডপ ও রাস্তায় মানুষের ঢল নেমেছিল। তা আটকানো সম্ভব হয়নি। তবে সোমবার চারদিক বাঁশ দিয়ে ঘিরে আত্রেয়ীর সদরঘাটে দর্শনার্থীদের আটকে দিতে সক্ষম হয় পুলিশ। কিন্তু শহরের থানা মোড়ে আত্রেয়ীঘাটে শোভাযাত্রা দেখতে রাস্তায় ভিড় উপচে পড়ে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে জানান, এদিন পর্যন্ত সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বাড়ানো হবে।
তথ্য সহায়তা: জয়ন্ত সেন, অভিজিৎ সাহা, অনুপ মোহান্ত ও গৌর আচার্য
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy