Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ঢাকে কাঠি পড়বে কবে, চিন্তায় রমেনরা

সব ঢাকিই যে ফোনে বরাত পান, তা নয়। তবে পুজোর মরসুমে কেউই বসে থাকেন না। বরাত না পেলেও পঞ্চমীর দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যান অনেকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৫:২৬
Share: Save:

এই সময়ে বায়না আসা শুরু হয়ে যায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কিন্তু, করোনার জেরে এ বছর এখনও কোনও বরাত পাননি ঢাকিরা। উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়া, হেমতাবাদ কালিয়াগঞ্জ এবং করণদিঘি এলাকার ঢাকিপাড়ায় তাই চিন্তায় সকলেই। পুজো উদ্যোক্তাদের ফোনের অপেক্ষায় বসে তাঁরা। কিন্তু, এ বছর দুর্গাপুজোয় আদৌ ভাড়া মিলবে কিনা, তা নিয়েই এখন সংশয়ে অনেকে।

চাকুলিয়ার ঢাকিপাড়ায় বেশ নামডাক রয়েছে রমেন রুইদাসের। দাওয়ায় বসে ঢাকের কাঠি দু’টির দিকে তাকিয়ে বললেন, “এ বার যা অবস্থা, তাতে দুর্গাপুজোয় আদৌ ঢাকে কাঠি পড়বে কিনা, সেটাই বুঝতে পারছি না। মন ভাল নেই। জানি না আবার কবে ঢাকে বোল উঠবে।” জানালেন, এই সময়ে থেকেই তাঁদের কাছে ফোন আসা শুরু হয়। জেলার শহর বাদে ভিন্ রাজ্যে নামকরা সমস্ত পুজোকমিটি তাঁদের ভাড়া করে নিয়ে যায়। কিন্তু, এ বছরটায় সমস্ত হিসেব যেন উল্টে গিয়েছে। এখনও কোনও ফোন আসেনি বলে আক্ষেপ রমেনের।

সব ঢাকিই যে ফোনে বরাত পান, তা নয়। তবে পুজোর মরসুমে কেউই বসে থাকেন না। বরাত না পেলেও পঞ্চমীর দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যান অনেকে। সেখানেই কোনও না কোনও পুজো কমিটির ভাড়া মিলে যায়। কিন্তু এ বার কি তা হবে-- প্রশ্ন করণদিঘির ঢাকি শিবু রুইদাসের।

ঢাকিরা জানালেন, দুর্গাপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজোর রোজগারে সারা বছর ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা আর জামা-কাপড়ের খরচ উঠে আসে। পুজোর সময়ে দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা রোজগার হয়। এমনকি, দুর্গাপুজো থেকে কার্তিক পুজো পর্যন্ত ১২-১৫ হাজার টাকা আয়ও হয় বলে জানালেন অনেকে। রোজগার কিছু হয় গাজনেও। আর বাকি সময়টা দিনমজুরি করে চালান তাঁরা।

এ দিন শিবু জানালেন, করোনার জেরে এ বার গোটা গাজনের মরসুমে এক পয়সাও ঘরে আসেনি।

তাঁর কথায়, “বিভিন্ন গ্রামে গাজনে বাজাতে যেতাম। শিবের, ভগবতীর, ধর্মরাজের গাজন সমস্ত চলে গেল। বাড়িতে বসেই কেটে গেল গোটা মরসুম। পয়সার মুখ দেখলাম না। টানাটানির সংসারে পুজো আর গাজনই ভরসা। কবে আবার সব স্বাভাবিক হবে কে জানে!”

ঢাকিদের একাংশের দাবি, একশো দিনের কাজ শুরু হয়েছে বলেই সংসার চলছে। ইসলামপুরের এক ঢাকি রবি রুইদাস বলেন, “ঢাক বাজানো শুধু পয়সার জন্য নয়, এটা একটা নেশাও। জৈষ্ঠ্যে গাজন শেষ হয়। আষাঢ় এলেই প্রতি সন্ধ্যায় সকলে এক জায়গায় জড়ো হন। তালিম দেওয়া হয় নতুনদের। নতুন বোল তৈরি হয় পুজোর কথা ভেবে। এ বার কী হবে, জানি না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy