অস্ত্র পাচারে উদ্বেগ। — ফাইল চিত্র।
কিছু দিন আগেই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার এসে উত্তরবঙ্গের ‘চিকেন’স নেক’ এলাকায় নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন। নজরদারি বাড়ানোরও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে, পর পর কয়েক সপ্তাহ ধরে ট্রেনে অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে বেড়েছে চিন্তা। সম্প্রতি গোয়ালপোখর ও ইসলামপুরে গুলি চলে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ওয়ান শটার নিয়ে পঞ্চায়েতের অর্থ কমিটির বৈঠকে ঢুকে গ্রেফতার হয় এক জন। সোমবার রাতেও গোয়ালপোখরে অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ সব ঘটনাতেই প্রশ্ন উঠেছে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে, নতুন করে ট্রেনে অস্ত্র পাচার বাড়ছে না তো! কিছু দিন আগে, ডালখোলায় চলন্ত ট্রেন থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। মালদহ-বালুরঘাট রুটের ট্রেনেও অস্ত্র মিলেছিল। আলিপুরদুয়ার ডিভিশনেও এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে অস্ত্র মিলেছিল বলে দাবি রেল সুরক্ষা বাহিনীর। প্রশ্ন উঠছে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কি বিহার থেকে আসা অস্ত্র পাচারের কায়দা বদল হচ্ছে! ট্রেনে কেনমিলছে অস্ত্র?
লোকাল ট্রেনগুলিতে রেল পুলিশের নজরদারি প্রায় নামমাত্র বলে অভিযোগ। তা ছাড়া, উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ এনজেপি শিলিগুড়ি জংশনের মতো স্টেশনগুলিতে লাগেজ স্ক্যানার, স্ক্যানার গেট হয় নেই, না হলেও বেশির ভাগ সময় চালানো হয় না বলে অভিযোগ। যদিও রেলের আধিকারিকদের দাবি, নজরদারি রয়েছে বলেই রেল পুলিশের হাতে অস্ত্র-সমেত কারবারিরা ধরা পড়ছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘‘আমাদের রেল সুরক্ষা বাহিনীর নজরদারি সব সময় রয়েছে। বেআইনি অস্ত্র কয়েকটি ক্ষেত্রে ট্রেন থেকে আরপিএফ-ই উদ্ধার করেছে।’’
পুলিশের তথ্য বলছে, বিহারের মুঙ্গের থেকে কাটিহার। সেখান থেকে পূর্নিয়া, কিসানগঞ্জ ছুঁয়ে উত্তরবঙ্গ—এটাই এ রাজ্যে অস্ত্র ঢোকার অন্যতম সাবেক ‘পথ’। গত কয়েক বছর ধরে উত্তর দিনাজপুর-সহ উত্তরবঙ্গে যে সব বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তার অধিকাংশই মুঙ্গেরে তৈরি। পুলিশি নজরদারির মুখে, নজর বাঁচিয়েই ‘রুট’ পরিবর্তন চলছে বলে সূত্রের দাবি। উত্তর দিনাজপুরের ন’টির মধ্যে সাতটি ব্লক বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা। জেলার একাংশে বিহারের সীমানা। ওই এলাকাই বিহার থেকে আসা অস্ত্রের ‘করিডর’ বলে জানাচ্ছে পুলিশ। সড়ক ছাড়াও, ট্রেনে অস্ত্র নিয়ে আসার ঘটনা বাড়ছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুঙ্গের থেকে ট্রেনে করে কাটিহার ও কিসানগঞ্জে আসে ‘সামান’ (অস্ত্র)। অস্ত্রের দামের অর্ধেক আগাম দিলেই এক-দু’সপ্তাহে জায়গায় পৌঁছে যায় ‘সামান’। বহনকারী পায় দু’হাজার টাকা।
ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার বিশপ সরকার বলেন, ‘‘অস্ত্র কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। গ্রেফতারও হচ্ছেন অনেকে।’’ রেল পরিসরে নজরদারি বাড়িয়ে অস্ত্র চালানের উপরে রাশ টানা জরুরি বলে মনে করছেন রেল আধিকারিকেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy