প্রতীকী ছবি।
এক যুবকের মৃত্যুর পরে এনআরসি আতঙ্কের অভিযোগ উঠল ধূপগুড়িতে। ভ্যানচালক ওই যুবক, শ্যামল রায় (৩৯) আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তাঁর পরিবারের। তাঁদের দাবি, এনআরসির আতঙ্কেই উদ্বিগ্ন ছিলেন শ্যামল। সেই উদ্বেগেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে শেষ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন বলে দাবি তাঁর পরিজনদের।
বর্মণ পাড়ার এক বাড়িতে দশ ফুট বাই দশ ফুট ঘরে স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন তিনি। মৃতের স্ত্রী ময়ন্তি রায়ের দাবি, ‘‘ভোটার কার্ড হারিয়ে ফেলেন স্বামী। কয়েক দিন ধরেই এই কার্ড নিয়ে স্বামী উদ্বিগ্নও ছিলেন। বলছিলেন, কার্ড না থাকলে এনআরসিতে গোলমালে হতে পারে। সেই ভয়ে সোমবার ভোরে বাড়ি লাগোয়া এলাকায় গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন স্বামী।’’ পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রতিবেশীরাও জানান, এনআরসি নিয়ে অসমের পরিস্থিতি দেখে তাঁরা চিন্তিত।
এ দিন ওই বাড়িেত গিয়ে দেখা যায়, মায়ের সঙ্গে কাঁদছে মেয়ে শম্পা ও ছেলে সুদেব। প্রতিবেশী অরিনা খাতুন, ফাতেমা বিবিরা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। অরিনা খাতুন বলেন, ‘‘শ্যামলের নিজের বাড়ি ঘর নেই। সামান্য টাকার বিনিময়ে ভাড়া থাকতেন। এমনকি নিজের ভ্যানরিকশাও ছিল না। ৫০ টাকা কিস্তিতে অন্যের ভ্যান নিয়ে চালাত। ভোটের কার্ড হারিয়ে যাওয়ার জন্য খুব চিন্তায় ছিল। আমাদেরও বলত এনআরসিতে কিভাবে নাম উঠবে।’’
এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, এখন যে অবস্থা তাতে প্রতিদিন মানুষ অন্য কাজ ছেড়ে সরকারি খাতায় নিজেদের নাম তুলতে বা সংশোধন করতেই ব্যস্ত। অনেকে দিনমজুরির কাজ করেন। সে কাজ না করে সরকারি অফিসে ছুটছেন। তাতে তাঁদের বেশ কয়েক দিনের মজুরি নষ্ট হচ্ছে। কেননা, এক দিনে সব কাজ হচ্ছে না। বারবার যেতে হচ্ছে। সে ক্ষতিও তাঁরা স্বীকার করছেন এনআরসির ভয়ে। এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘দেশ থেকেই বার করে দিলে আর কাজ করব কী!’’
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, গৌতম দেব, বিধায়ক মিতালি রায়, ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিংহ, তৃণমূল জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীরা মৃতের বাড়িতে যান। এই পরিবারের সদস্যদের পাশে আছেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা।
ধূপগুড়ির বিধায়ক মিতালী রায় বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে প্রতিদিনই অনেকে আসেন। কিছু দিন আগেও মানুষ হয় বিধবা ভাতা না হয় ঘর তৈরির জন্য সরকারি বরাদ্দের কথা বলতেন। গত কয়েক দিন ধরে দেখছি সবাই এখন এনআরসির আতঙ্কের কথা বলছেন।’’ বিজেপি অবশ্য দাবি করেছে, তৃণমূলই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy