কোচবিহারে বাড়ছে রাজনৈতিক হিংসা
একের পর এক রাজনৈতিক সংঘর্ষে বারে বারে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কোচবিহার। রাত হলেই বোমা-গুলিতে তঠস্থ হয়ে ওঠে রাজনগরী। কখনও ভরা বাজারে বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। কখনও গভীর রাতে বোমা-গুলির শব্দে জেগে ওঠেন নিরীহ মানুষ। বোমার আঘাতে জখম হয়েছে স্কুল-ছাত্র। লোকসভা নির্বাচনের পরে এমন টানা গণ্ডগোল চলছে। এই অবস্থায় পরস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার কোচবিহারে পৌঁছন রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। তাঁর সঙ্গেই জেলায় পৌঁছেছেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ পুরস্কায়স্থ। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার, জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বলকর সহ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন তাঁরা।
ডিজি বলেন, ‘‘এটা জেনারেল রিভিউ মিটিং। আইনশৃঙ্খলা এবং ক্রাইম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশ প্রত্যেক ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবে।’’ রাজনৈতিক সংঘর্ষ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
এনআরসি নিয়ে অসম সীমান্তে নজরদাড়ি বাড়ানো নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নজর রাখা হচ্ছে। পুলিশের কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, তা করা হচ্ছে।"ভেটাগুড়িতে গতকাল তৃণমূল ও বিজেপির লড়াইয়ে গুলি ও বোমা চলে সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’’
কিছু দিন আগে পর্যন্ত কোচবিহার তৃণমূলের ঘাঁটি বলেই পরিচিত ছিল। সেই জায়গায় থাবা বসিয়েছে বিজেপি। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসন তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। তার পর থেকেই কার্যত তৃণমূল শূন্য হয়ে পড়ে জেলা। বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া পর্যন্ত ঘর ছাড়া হয়ে যান। তৃণমূলের প্রতিনিধি দল এমনকি রাজ্যের শাসক দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি পর্যন্ত বিজেপির বাধায় মাঝ রাস্তা থেকেই কর্মসূচি বাতিল করে ফিরে যান।
তবে গত এক মাস ধরে পরিস্থিতি খানিকটা পাল্টাতে শুরু করে। তৃণমূল ফের সংগঠিত হয়ে এলাকা উদ্ধারে নামে। সিতাই, শীতলখুচি, কোচবিহার দক্ষিণ বিধানভা কেন্দ্র থেকে নাটাবাড়ি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ব্যাপক বোমা-গুলির অভিযোগ ওঠে। জখম হন দু’পক্ষের প্রচুর সমর্থক।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই অবস্থার কিছুতেই পরিবর্তন হচ্ছে না। আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা কোথা থেকে কিভাবে কোচবিহারে ঢুকছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন জেলা পুলিশের কর্তারা। তদন্তে নেমে পুলিশ আধিকারিকরা কোচবিহারে অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে কারা যুক্ত, তার একটি তালিকা তৈরি করছেন। তাঁদের গ্রেফতারের জন্যেও উদ্যোগ হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছেই জানা গিয়েছে, বিহারের মুঙ্গের থেকে অস্ত্র এনে কোচবিহারে বিক্রি করা হচ্ছে। সে জন্য একটি বড় নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। ওই ব্যবাসায়ীরাই স্থানীয় ভাবে বোমা তৈরি করে তা বিক্রি করছে। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতা কিছু অস্ত্র ব্যবসায়ী জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছে। সেক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সব খতিয়ে দেখে ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করতেই ডিজি-র এই সফর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy