কোথাও মেনুর পাশেই কার্ডে বিল মেটানোর নোটিস, (ডান দিকে) কোথাও ফাঁকাই রইল হোটেল।
দাম কমলেও বিমুখ ক্রেতারা। ভর দুপুরেও ফাঁকা পড়ে রয়েছে হোটেলের চেয়ার টেবিল। ভিড় নেই রেঁস্তোরাগুলিতে। খুচরোর প্রভাব পড়েছে মালদহের হোটেল ব্যবসাতেও। খুচরোর অভাবে জেলার হোটেল গুলিতে এক ধাক্কায় ব্যবসা কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। যার জেরে মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীদের।
লোকসান থেকে বাঁচতে শহরের ছোট হোটেল, রেঁস্তোরা গুলিতেও কার্ডের মাধ্যমে চলছে লেনদেন। এক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হোটেল ব্যবসায়ী নীলকৃষ্ণ ঘোষ। তিনি বলেন, ৮০ শতাংশ ক্রেতা কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট দিচ্ছে। ফলে সেই টাকা আমার অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে। এ দিকে, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে না পারায় বাজারে দেনা হয়ে গিয়েছে। এমনকী, আমার হোটেলের কর্মীদের মাইনেও দিতে পারছি না।
হোটেল, রেঁস্তোরার রমরমা কারবার মালদহ শহরে। শহরের মোড়ের মাথায় ক্রমশ গজিয়ে উঠেছে ছোট হোটেল, রেঁস্তোরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু মাত্র ইংরেজবাজার শহরেই রয়েছে ৬৭টি হোটেল। এছাড়া নথিভুক্ত নয়, এমন ছোট হোটেলের সংখ্যাও প্রায় শতাধিক। সকাল দশটা থেকে রাত পর্যন্ত এই সমস্ত ছোট বড়ো হোটেলে উপচে পড়ত ভিড়। বিরিয়ানি, মটন কসা, চিকেন কাবাব খাওয়ার জন্য লাইন পড়ত ক্রেতাদের। তবে সপ্তাহ দুয়েক ধরেই সেই চেনা ভিড় নেই হোটেল, রেঁস্তোরা গুলিতে। ক্রেতাদের টানতে ব্যবসায়ীরা কমিয়ে দিয়েছেন খাবাবের দাম। তবুও দোকান ফাঁকা। ব্যবসায়ীরাই জানিয়েছেন, মাস খানেক আগে প্রতি প্লেট চিকেন বিরিয়ানি ১২০ টাকা, মটন বিরিয়ানি ১৪০ টাকা, বিরিয়ানি ৮৫ টাকা, চিকেন ভাত ৯০ টাকা, মটন ভাত ১২০ টাকা ও মাছ ভাত ৮০ টাকায় বিক্রি হত। সপ্তাহ খানেক ধরে প্রায় অর্ধেক দরে বিক্রি হচ্ছে এই খাবারগুলি। তবুও ভিড় নেই দোকানগুলিতে। পেশায় স্কুল শিক্ষক মৃনাল চৌধুরী বলেন, ‘‘সপ্তাহে দু’দিন ছেলে বউকে নিয়ে রাতে বাইরে খাওয়া দাওয়া করতাম। এখন রোজ ডাল ভাত জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অ্যাকাউন্টে টাকা থাকলেও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তোলার ভয়ে বাইরের খাওয়ার ছেড়ে ঘরের ডাল ভাতই তৃপ্তি করে খাচ্ছি।’’
ক্রেতাদের টানতে এখন শহরের ছোট বড়ো হোটেল গুলিতে সুইপ মেশিন বসানোর হিড়িক পড়ে গিয়েছে। রাস্তার ধারের হোটেলগুলিতেও কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্টের সুবিধা রয়েছে বলে নোটিসও ঝোলানো হয়েছে। এক হোটেলের মালিক বলেন, ‘‘কার্ডেও সমস্যা রয়েছে ঠিকই। তবে কিছুটা হলেও তো লোকসান কমবে।’’ মালদহের হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘‘খুচরোর জন্য দৈনিক ৫০ শতাংশ ব্যবসা কমেছে হোটেলগুলিতে। বিশেষ করে মার খাচ্ছে খাবারের হোটেলগুলি। একই সঙ্গে সমস্যা পড়েছে হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার কর্মীরা।’’ — মনোজ মুখোপাধ্যায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy