বিজয়ী: জয় উদ্যাপনে অনীত থাপা। নিজস্ব চিত্র।
প্রশ্ন: তিন দশক ধরে রাজনীতি করছেন। কিন্তু নিজের দল তো একেবারে নতুন। তা হলে এমন জয় কী ভাবে সম্ভব হল?
অনীত: গত পাঁচ বছরে সবাইকে নিয়ে টানা কাজ করে গিয়েছি। আমাদের দল বিধানসভায় একটি মাত্র আসন জেতে। পুরভোটে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। কিন্তু আমরা থেমে থাকিনি। পাহাড়কে শান্ত রেখেছি। মানুষের কাজের, উন্নয়নের কথা বলেছি। করোনায় মানুষের পাশে থেকেছি। এ বার মানুষ আমাদের পাশে থেকেছে।
প্রশ্ন: এ বারের জিটিএ ভোটকে কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন? শান্তি, উন্নয়ন নাকি গণতন্ত্রের ভোট?
* ২০১৭ সালেই আমরা পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। আগুন নিয়ে যুবকদের খেলা করা আটকেছি। মানুষকে রাতদিন বোঝাতে হয়েছে। এখনও বোঝানো বাকি। উল্টে, আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলা হয়েছে। শেষে, পাহাড়ে শান্তি এসেছে। এ বার পাহাড়ের সমৃদ্ধির পালা। সমস্ত ব্যবস্থাকে ঠিক করতে হবে। তা হলেই উন্নয়নের কাজ তরান্বিত হবে। আর গণতন্ত্র ভোটের মাধ্যমেই আসে, বিরোধিতায় নয়। যা পাহাড়ে এসেছে।
প্রশ্ন: ভোটের প্রচারে গোর্খাল্যান্ড আলাদা রাজ্যের কথাও সামনে এসেছে। আপনিও নানা কথা বলেছেন। এ বার কী পরিকল্পনা?
* আলাদা রাজ্য তো আমাদের হৃদয়ে। এটা কোনও গোর্খা ভুলতে পারে না। আর মনে রাখতে হবে, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। রাজ্যের সঙ্গে গোলমাল করে কী হবে? আমরা প্রতিশ্রুতি মতো, জিটিএ সভার প্রথম বৈঠকে আলাদা রাজ্য নির্মাণের রূপরেখা তৈরির প্রস্তাব আনব। অনীত থাপা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাস্তবসম্মত কাজ করে, ক্ষমতার চেয়ার নিয়ে বসে রাজনীতি নয়।
প্রশ্ন: জিটিএ গঠনের পরে কোন কাজকে অগ্রাধিকার দেবেন?
* পাহাড়ে তো কাজের শেষ নাই। গত পাঁচ বছরে সে ভাবে কাজ হয়নি। পানীয় জল, রাস্তাঘাট, নিকাশি, পর্যটন থেকে পরিকাঠামো— সব করতে হবে। কিন্ত গোটা ব্যবস্থাকে আগে তৈরি করতে হবে। শিক্ষক থেকে সরকারি কর্মীদের স্থায়িত্ব নেই। শূন্যপদ অনেক। কাজের লোক দরকার। ধীরে ধীরে এটা করতে পারলে বাকি পরিকাঠামো, উন্নয়নের কাজ হবেই।
প্রশ্ন: কেন্দ্র ও রাজ্য দু’পক্ষকে নিয়েই তো এ বার চলতে হবে?
* আমি তো প্রথম থেকেই রাজ্যের সঙ্গে আছি। আরে রাজ্যের সঙ্গে গোলমাল করে কোনও এলাকার কাজ হতে পারে নাকি! আর জিটিএ-তে তো কেন্দ্রের আইনি দায়বদ্ধতা আছে। তাদেরও তা পালন করতে হবে। তাই সবাইকে নিয়েই চলতে হবে।
প্রশ্ন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে?
* মুখ্যমন্ত্রী আমাকে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। কয়েক দিনের মধ্যে কলকাতা যাব। তখন আশা করি, সবার সঙ্গে দেখা হবে। পাহাড়ে নিয়ে কথা হবে। রাজ্য সরকারের সাহায্যেই আমাদের জিটিএ চালাতে হবে।
প্রশ্ন: বিজেপি, জিএনএলএফ থেকে বিমল গুরুং— ভোট রাজনীতির বিরোধিতা করেছেন ওঁরা। ওদের নিয়ে এখন কিছু বলবেন?
* সবার নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে। সবার নিজস্ব ভাবনা রয়েছে। আর আমি কোনও দিন প্রতিহিংসার রাজনীতি করিনি। আগামীতেও করব না। সবাইকে নিয়ে সুন্দর পাহাড় তৈরি করাই আমার লক্ষ্য। যাঁরা এগিয়ে আসবেন, ভাল। কর্মীদের বলেছি, কোনও অশান্তি, গোলমাল যেন না হয়। কাউকে আঘাত নিয়ে আমরা আনন্দ করতে পারি না।
প্রশ্ন: দেশ জুড়ে দল ভাঙার রাজনীতি চলছে। কী মনে হয় দার্জিলিঙেও দল ভাঙাগড়ার খেলা দেখা যাবে?
* আমরা দার্জিলিং এ বারও দখল করতে পারিনি। আগামী দিনে শুধু দার্জিলিং কেন, সব পুরসভাই দখল করব। তা পাহাড়বাসীর আর্শীবাদ নিয়েই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy