ফাইল চিত্র।
তখনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এসে পৌঁছননি। তাঁর মঞ্চ থেকে একের পর এক বিজেপি নেতা প্রাকারান্তরে দাবি তুললেন বঙ্গভঙ্গের। উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত— এই কথা বলে তাঁরা প্রশ্ন তুললেন, তা হলে কি বাংলা ভাগের দাবি অযৌক্তিক? তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই মঞ্চে তখন রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। দিলীপ কিন্তু এই দাবিকে অন্যায্য বা অযৌক্তিক বলেননি।
গত বছর বিধানসভা ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার পর থেকে বিজেপি নেতারা বারবার উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবি তুলছেন। আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ আচমকা গরমের ছুটির ঘোষণার বিরোধিতা করতে গিয়ে এই দাবি জানিয়েছেন। এ দিন সেই বিতর্ক ফের উস্কে দিয়ে মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ সার্বিক ভাবে বঞ্চিত। তাই মানুষ চায়, উত্তরবঙ্গ আলাদা হোক। জনগণের দাবিই আমরা তুলে ধরছি।’’ ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের মানুষ উন্নত পরিষেবা চান। কাশ্মীর, গোয়ার মতো শাসন চান। তাঁদের এই দাবির বিষয়টিই আমরা তুলে ধরছি।’’
উত্তরবঙ্গের বিধায়কদের এই কথার মধ্যেই দিলীপও বক্তৃতা দেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেকে বলেছেন, আমরা আলাদা হতে চাই। এই অত্যাচার, অপমান, শোষণ থেকে আলাদা হওয়ার দাবি উঠেছে। আমরা এ কথা বললেই তৃণমূল এবং তাদের লোকেরা বলছে রাজ্য ভাগ করতে চাইছে।’’
অমিত শাহ কিন্তু নিজের বক্তৃতায় সচেতন ভাবে উত্তরবঙ্গকে রাজ্যের সঙ্গে এক বন্ধনীর মধ্যে রেখেছেন। একবার তিনি উত্তরবঙ্গের ‘বঞ্চনার’ প্রসঙ্গ তুলেছেন ঠিকই, কিন্তু সেটা এমসের প্রসঙ্গেই শেষ হয়ে গিয়েছে।
বিজেপির বিধায়কদের এই ধরনের কথাকে বিভাজনের রাজনীতি বলে মনে করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপি, সিপিএমের একটাই কাজ, টুকরো করো। হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-বাঙালি, বাংলাভাষী-রাজবংশী।’’ তার পরেই অমিত শাহকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কী করেছেন?’’ শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘এক সময় পাহাড় ভাগ, রাজ্য ভাগ নিয়ে বলেছেন ওঁরা। এখন উত্তরবঙ্গকে নিয়ে ছোট রাজ্যের কথা বলে আগুন নিয়ে খেলতে চাইছে। বাংলার মানুষ কোনও ভাবেই মেনে নেবে না।’’
সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বঞ্চিত শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, সারা দেশ বঞ্চিত। উত্তরবঙ্গের বিশেষ কিছু সমস্যা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। নির্বাচন এলেই তাঁরা সরব হন। কিন্তু সারা বছর তাঁদের বিধায়ক, সাংসদদের কিছু করতে দেখি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy