প্রতীকী ছবি।
ভবিষ্যৎ কী? এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে পাহাড়ের পড়ুয়াদের মনে। আন্দোলনের জেরে অচলাবস্থা চলতে থাকায় প্রায় দু’মাস ধরে তারা স্কুল কলেজে যেতে পারছেন না। জুন মাসের প্রথম দিকে থেকেই বাড়িতে বসে আছেন তাঁরা। কেউ কলকাতায় থাকেন, কেউ কোচবিহারে কেউ আবার আলিপুরদুয়ারে। সকলেই দার্জিলিঙের নানা স্কুল-কলেজের পড়ুয়া। পড়াশুনা এ ভাবে থমকে যাওয়ায় চিন্তায় তাঁদের অভিভাবকেরাও। অনেকে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ার সুযোগ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে।
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে জুন মাসের প্রথম থেকে শুরু হয় টানা বন্ধ। পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে আশঙ্কা করেই বাড়ি চলে এসেছেন সকলে। ক্লাস তো বন্ধই, শিক্ষাবর্ষের শেষে পরীক্ষাই আদৌ দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ুয়ারা।
তবে এর প্রতিবাদ করলেও হামলার আতঙ্ক রয়েছে। তাই নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননা কেউই। কলকাতা থেকে ফোনে দার্জিলিং গভর্নমেন্ট কলেজের চতুর্থ সেমেষ্টারের এমএসসির এক ছাত্রী জানালেন, ‘‘নেট পরীক্ষার জন্য বাড়িতে এসেছিলাম। তারপর থেকেই পাহাড়ে অচলাবস্থা। এ বছর শেষ সেমেস্টার, কী করব বুঝতে পারছি না। বিষয়টি বিকাশ ভবনে গিয়ে আধিকারিকদেরকেও জানিয়েছি।’’ আলিপুরদুয়ার জংশনের এক ছাত্রীও ওই কলেজের পড়ুয়া। এমএসসি প্রথম সেমেস্টারের ওই পড়ুয়ার কথায়, ‘‘৭ জুন জানতে পারি পাহাড়ে বন্ধ হবে। তড়িঘড়ি এক পোশাকে মোবাইল নিয়ে নেমে এসেছি। বইপত্র সব মেসবাড়িতে আছে। কী করব কিছুই বুঝছি না। সামনের নভেম্বর মাসে পরীক্ষা।’’ বিষয়টি নিয়ে পড়ুয়াদের অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ই-মেলও পাঠিয়েছেন।
দার্জিলিং গভর্নমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ প্রোজ্জল লামা জানান, কলেজ স্বাভাবিক হলে পড়ুয়াদের অতিরিক্ত ক্লাস করানোর চেষ্টা হবে। তবে কলেজ কবে খুলবে তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই বলে জানাচ্ছেন পড়ুয়াদের একাংশই। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘‘কার্যত শিক্ষার অধিকার আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে। পড়ুয়া ও তাদের পরিবারের উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। রাজ্য চেষ্টা করলেও কেন্দ্রের কোনও হেলদোল নেই অচলাবস্থা কাটাতে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানাব।’’
দিশাহারা অভিভাবকেরাও। এক অভিভাবক সুকুমার সিংহ জানান, তাঁর ছেলে দার্জিলিংয়ের একটি বেসরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। আপাতত বাড়িতে রয়েছে। কী করবেন বুঝতে পারছেন না তাঁরা। আরেক অভিভাবক চন্দন দে বলেন, ‘‘ওদের ভবিষ্যৎ কি নষ্ট হয়ে যাবে? মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের উচিত উদ্যোগী হওয়া। যাতে পড়ুয়ারা অন্য কোথাও ক্লাস করে পরীক্ষাটুকু দিতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy