সফল: বাবাকে ফল দেখাচ্ছে মাইনুর। নিজস্ব চিত্র।
বাবা, মা দু’জনেই দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। একমাত্র মেয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করেছে। চলতি বছরের হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় মাইনুর খাতুন নামে সেই ছাত্রীই ৭৯৬ নম্বর পেয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে। মাইনুরের বাড়ি রায়গঞ্জ ব্লকের বাংলা-বিহার সীমানা লাগোয়া বাহিনের ঝিটকিয়ায়। সে স্থানীয় শঙ্করপুর এমএইচইউ হাই মাদ্রাসার ছাত্রী।
ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মজিবর রহমানের দাবি, এবারে মাদ্রাসার মেধা তালিকা প্রকাশ হয়নি। কিন্তু মাইনুরের প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী সে রাজ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। তিনি বলেন, “মেধা ও ভাল ফল করার জেদ থাকলে আর্থিক অনটন যে কোনও প্রতিবন্ধকতা হয় না, তা প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার মেয়ে মাইনুর ৭৯৬ নম্বর পেয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে।”
মাইনুরের বাবা মনসুর আলি ও মা নার্গিস খাতুন দু’জনেই দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিক। টাকার অভাবে মেয়েকে প্রাইভেট টিউশন দিতে পারেননি। ছোট থেকেই মাইনুর প্রতিবেশি আতিউর রহমানের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করেছে। আতিউর ওই মাদ্রাসায় শিক্ষাকর্মীর পদে কর্মরত। মাইনুরকে আতিউর ও তাঁর ছেলে জয়াবিনের বিভিন্ন বিষয়ের পড়া দেখিয়ে দিতেন। লকডাউনের জেরে প্রায় এক বছর আগে মনসুর ও নার্গিস বাড়ি ফেরেন। সেই থেকে তাঁরা কর্মহীন।
মাইনুর জানিয়েছে, সে বাংলা, অঙ্ক, জীবনবিজ্ঞান ও ভূগোলে ১০০ করে, ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা, ইতিহাস ও ইসলামিক পরিচয়ে ৯৯ করে নম্বর পেয়েছে। মাইনুর বলে, “করোনা আবহে স্কুলের শিক্ষকেরা নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস করিয়েছেন। পঞ্চম শ্রেণি থেকেই স্কুল থেকে বিনে পয়সায় আমাকে বই ও খাতা দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে।” সে জানিয়েছে, হাওড়া জেলার আল আমিন মিশনে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা করতে চায়। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন। মজিবর বলেন, “মাইনুরের উচ্চ শিক্ষার স্বার্থে ভবিষ্যতেও স্কুলের তরফে সবরকম সহযোগিতা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy