প্রতীকী ছবি।
কাটমানি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। এমনিতেই এই জেলায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব বেশি বলে খোদ শাসক দলের অন্দরেই দাবি। তার উপরে সম্প্রতি দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা বাড়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আরও চিন্তায় পড়েছেন। সেই পরিস্থিতিতে কাটমানি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠছে। দলেরই একটি অংশের দাবি, দলীয় কোন্দলের জেরেই উঠে আসছে এতদিন ধরে চাপা থাকা ক্ষোভ।
শনিবার রাতে বালুরঘাটের বোল্লা অঞ্চলের তৃণমূল জেলাপরিষদের সদস্য শিপ্রা নিয়োগীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বালুরঘাট পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নীতা হাঁসদার বাড়িতেও কাটমানি নিয়ে অভিযোগ তুলে ভাঙচুর করা হয়েছে। তার মধ্যে শিপ্রাদেবী বিজেপিতে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছেন বলে তৃণমূলেরই একাংশ জানিয়েছেন। আবার, দলের একাংশের বক্তব্য, শিপ্রাদেবী বিপ্লববাবুর ঘনিষ্ঠ বলেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কাউন্সিলর নীতা হাঁসদার বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলেন শহরবাসীরাই। নীতার বিরুদ্ধে এ দিন বালুরঘাট থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। টাকা ফেরতের পাশাপাশি ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে বলে দাবি তোলা হয়েছে।
অন্য দিকে রাতে হামলার পর শিপ্রাদেবীর বাড়ির অন্য সদস্যরা বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে ভয়ে অন্যত্র সরে গিয়েছেন। দিল্লি থেকে শিপ্রাদেবী বলেন, ‘‘বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি বলেই তৃণমূলের একাংশ কর্মী হামলা চালাযন।’’
দু’টি ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে ডিএসপি ধীমান মিত্র জানান। তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষের দাবি, ‘‘কাটমানি ফেরত চেয়ে বাড়িতে বিক্ষোভ দেখানোর বদলে থানায় লিখিত অভিযোগ জানালে আইনত পদক্ষেপ হবে।’’
এ দিন দুপুরে বালুরঘাট থানায় এসে শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১২ জন মহিলা নীতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে নীতা কয়েক হাজার টাকা কাটমানি আদায় করেন বলে অভিযোগ। পাশাপাশি নীতার সহযোগী হিসেবে কয়েক জন তৃণমূল নেতার নামেও লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগকারীদের মধ্যে ফাল্গুনী প্রামাণিকের কাছে ৩০ হাজার টাকা, চম্পা রায়ের কাছে ১১ হাজার টাকা, কবিতা মহন্ত এবং নবমী মহন্তর কাছে যথাক্রমে ১৫ এবং ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। আবার কোনও উপভোক্তার কাছে ৫০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। তাঁদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই বিদায়ী কাউন্সিলর কাটমানি নিলেও, তাঁরা ঘর পাননি।
এ দিন অভিযোগ দায়ের করার আগে ক্ষুব্ধ লোকজন তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখান। বিপদের আঁচ বুঝে আগেভাগেই গা ঢাকা দেন অভিযুক্ত নীতা। পরে তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা কাটমানির অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
ফাল্গুনী প্রামানিকের অভিযোগ, কাটমানি নিয়েও ঘর দেননি বিদায়ী কাউন্সিলার নীতা। বর্তমানে পুরবোর্ডের বদলে প্রশাসক থাকায় ঘর দেওয়ার ক্ষমতাও নেই নীতার। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী তার দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন সাধারণ মানুষের থেকে নেওয়া কাটমানি ফেরত দিতে হবে। সুতরাং এ বার তারা তাদের টাকা ফেরতের দাবিতে অনড় বলে জানান।
বালুরঘাট টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুভাষ চাকি বলেন, ‘‘অনেক আগেই নীতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু কেউ আমাদের কাছে সরাসরি অভিযোগ জানাননি। এ বার নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরত দিতে বলেছেন। সুতরাং বিষয়টি আইনের পথে চলবে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy