মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
ক্ষতিপূরণ না দিয়েই রায়তি জমি দখল করে পাকা রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন এক দিনমজুর। তাঁর নালিশ, তাতে বাধা দেওয়ায় ঠিকাদারের হুমকির মুখেও পড়তে হচ্ছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও সমস্যার সুরাহা হয়নি।
এ বার তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দিনমজুর কার্তিক দাস। তাঁর সামান্য জমি বাঁচানোর আর্জি নিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ওই ব্যক্তির অভিযোগ ঠিক কী, তা জানতে চেয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে প্রশাসন।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, ‘‘উনি আমার কাছেও এসেছিলেন। তাঁর দাবি ঠিক কী না তা জানার জন্য ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলা পরিষদকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক মহম্মদ ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ বলেন, ‘‘রায়তি জমির উপর দিয়ে রাস্তা গিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছি। বিডিওকে রিপোর্ট পাঠানো হবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের হলদিবাড়ি থেকে ইশাদপুর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার রাস্তা প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় পাকা করা হচ্ছে। সেই রাস্তার পাশেই বাড়ি কার্তিক দাসের। তিনি দোকানে কাজ করে সংসার চালান। সম্বল বলতে বাড়ির কাছে পৈতৃক দু’বিঘা জমি। ওই রাস্তা তৈরির জন্য তাঁর জমির প্রায় তিন কাঠা দখল করা হচ্ছে বলে কার্তিকের অভিযোগ।
তাঁর বক্তব্য, রাস্তার জন্য কারও রায়তি জমি অধিগ্রহণ করতে হলে তাঁকে আগে জানানো হয়। ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি বা তিনি কোনও ক্ষতিপূরণও পাননি বলে কার্তিকের অভিযোগ। উল্টে তাঁর জমি কেন দখল করে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে, তা বলতে গেলে ঠিকাদার সংস্থার লোকজন হুমকি দিচ্ছেন। কার্তিকের বক্তব্য, রাস্তা তৈরির জন্য জমি দিতে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু তাঁকে যেন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। জমির নথি-সহ সেই আবেদনই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। কার্তিক এ দিন বলেন, ‘‘তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী। ওই দুই বিঘা জমি আর দোকানে কাজ করে সামান্য আয়ে সংসার চালাতে হয়। কয়েক দিন ধরে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে গিয়েও ফল হয়নি। বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’’ প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার কাজ হয় জেলা পরিষদের মাধ্যমে। জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য মমতাজ বেগম বলেন, ‘‘রাস্তা তৈরি করা হোক, কিন্তু তা কারও রায়তি জমি জবরদখল করে নয়। এমন হয়ে থাকলে তা মেনে নেওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রী মালদহে আসবেন। সুযোগ পেলে বিষয়টি তাঁকে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy