Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
tea gardeb worker

চা বাগানে গ্রাহক সেবাকেন্দ্র

কম সংখ্যক সিএসপি হওয়ায় এক’একটি বাগান থেকে সেগুলির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার অবধি ছিল। সেগুলিতে নগদ টাকার পরিমাণ কম রাখায় সমস্যা চলছিল। তাতে একাধিক বাগানের শ্রমিকদের লেনদেনে প্রভাব পড়ছিল।

ব্যস্ত: শিলিগুড়ির সুকনা চা বাগানে। নিজস্ব চিত্র

ব্যস্ত: শিলিগুড়ির সুকনা চা বাগানে। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:৩৩
Share: Save:

নোটবন্দির পর চা বাগিচায় শ্রমিকদের মজুরির দেওয়ার জন্য কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট (সিএসপি) বা গ্রাহক সেবা কেন্দ্র চালুর ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিভার্স ব্যাঙ্ক। কিন্তু গত দু’বছরে তা বাগানের শ্রমিক বা মালিকপক্ষের সমস্যা মেটাতে পারেনি বলে অভিযোগ। কম সংখ্যক সিএসপি হওয়ায় এক’একটি বাগান থেকে সেগুলির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার অবধি ছিল। সেগুলিতে নগদ টাকার পরিমাণ কম রাখায় সমস্যা চলছিল। তাতে একাধিক বাগানের শ্রমিকদের লেনদেনে প্রভাব পড়ছিল। দীর্ঘদিন চেষ্টার পর এবার প্রতিটি বাগান চত্বরে আলাদা আলাদা সিএসপি চালু হল। বুধবার তরাই এলাকার পাঁচটি বাগানের জন্য আলাদা কেন্দ্র হল।
এলাকায় টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (টাই) উদ্যোগী হয়ে স্টেট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ওই সেবা কেন্দ্রগুলি খোলানোর ব্যবস্থা করেছে। তবে শুধুমাত্র সেবা কেন্দ্র নয়, বাগানের ভিতরে থাকে প্রতিটি কেন্দ্রকে মিনি ব্যাঙ্কের সমানও বলা হচ্ছে। শুধুমাত্র মজুরির টাকা লেনদেন নয়, বাগানের শ্রমিক এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, বিভিন্ন ব্যাঙ্কিং লেনদেন করা যাবে। তরাই এলাকার বাগানের পর তা চালু হবে ডুয়ার্সে। টাই-র এক তরাই শাখার সচিব সুমিত ঘোষ জানান, বাগানে শ্রমিকদের মজুরির সমস্যা বিরাট বিষয়। কোনও কোনও বাগানে ৫০-৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এখন দু’টি সমস্যা চলছিল। এক তো শ্রমিকদের মাসে অন্তত ২ দিন কাজ বাদ দিয়ে টাকার জন্য লাইন দিতে হচ্ছিল। এতে বাগানে শ্রমিক অসন্তোষ বাড়তে থাকায় বহু বাগান নগদ মজুরি দিচ্ছিল। কিন্তু নগদ টাকার ক্ষেত্রে কেন্দ্র এক কোটি টাকার উপরে তুললে ২ শতাংশ কর বসিয়ে দেওয়ায় বাগান মালিকেরা সমস্যায় পড়েছেন। সুমিতবাবু বলেন, দু’পক্ষের সমস্যার কথা মাথায় রেখেই বাগানে গ্রাহক সেবা কেন্দ্র চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, সেবা কেন্দ্রগুলি ধীরে ধীরে ডুয়ার্সের বাগানেও খোলা হবে।
উত্তরবঙ্গের তরাই এলাকার থানঝোড়া, অটল, সাতভাইয়া, পাহাড়গুমিয়া, দাগাপুর বাগানে সিএসপি চালু হয়েছে। পাথরঝোরা, কুর্তি, গয়াগঙ্গা, হাসখোঁয়া, ত্রিহানা, নিউ চাম্পটা, মাটিগাড়া, নিশ্চিন্তপুর, বেলগাছি এবং গিরিশচন্দ্র চা বাগানের ভিতরে কেন্দ্র খোলার কাজ শুরু হয়েছে। বাগানগুলি এক্ষেত্রে তাঁদের দফতর বা কারখানার পাশেই একটি সুরক্ষিত ঘরের ব্যবস্থা করছে। পানীয় জল, শৌচালয় এবং বিদ্যুতের খরচ নিচ্ছে বাগানগুলি। বাকি ঘরটিকে মিনি ব্যাঙ্কের মত গড়ে তোলা দায়িত্ব স্টেট ব্যাঙ্ক নিয়োজিত একটি সংস্থার। তরাইতে ৪৭টি, ডুয়ার্সে ১৬৭টি এবং পাহাড়ে ৮৬টি মত বড় বাগান রয়েছে। সব মিলিয়ে ৫ লক্ষের বেশি শ্রমিক বাগানগুলিতে কাজ করে। প্রতিদিন ১৭৬ টাকা হাজিরার ভিত্তিতে বেশিরভাগ বাগানে ১৫ দিন অন্তর মজুরি দেওয়া হয়। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, অধিকাংশ শ্রমিক অনলাইনে অনেক কিছুই বুঝতে পারেন না। অন্যের উপর নির্ভর করতে হয়। বাগানের ভিতরে সেবা কেন্দ্র থাকলে সুবিধে হবে। কাজ বাদ দিয়ে দূরে যাওয়া, এটিএমের ব্যবহার এড়াতে পারবে

অন্য বিষয়গুলি:

tea gardeb worker csp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE