রবিবার জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় সৈকতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হল জলপাইগুড়ি জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা পুরসভার উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি সৈকত-ঘনিষ্ঠ সন্দীপ ঘোষ-সহ চার জনের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় সৈকতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। বিধায়কের ভাই জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির প্রাক্তন সদস্য সুবোধ ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্ত্রী পুরসভার ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান অপর্ণা ভট্টাচার্যের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় গত শনিবার। পরিবারের দাবি, দু’জনে এক সঙ্গে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
দম্পতির শোওয়ার ঘর থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ দিন অভিযোগ দায়ের করে বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ‘সুসাইড নোটে’ সৈকত, সন্দীপ-সহ চার জনের মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে এই পথ বেছে নেওয়া হয়েছে বলে লেখা ছিল। সৈকতের পাল্টা দাবি, গোটাটাই ষড়যন্ত্র। ‘সুসাইড নোট’ অপর্ণা ভট্টাচার্যের হাতে লেখা নয়। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ২০১৩ সালে শিখা যখন তৃণমূলে ছিলেন তখন তাঁর প্রভাব খাটিয়ে অপর্ণা ভট্টাচার্য চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন। শিখা নিজে বাঁচতে তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন বলে সৈকতের দাবি। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপের মন্তব্য, “এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সবটাই ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের দল তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁদের ব্যক্তিগত বা পেশাদারি জায়গা থাকতে পারে,সেটা তাঁরা ভাল বলতে পারবেন।”
এ দিন থানায় সৈকত, সন্দীপ-সহ অভিযুক্তদের ছবি নিয়ে এসেছিলেন শিখা চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপি নেতারা। সেখানে সাংবাদিক বৈঠকে শিখা বলেন, “সৈকত চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপ ঘোষ-সহ বাকিরা শিশু পাচার কাণ্ডে জড়িত বলে সুইসাইড নোটে পরিষ্কার লেখা রয়েছে। আমার ভাই সুবোধ ভট্টাচার্য শিশুকল্যাণ সমিতির সদস্য থাকাকালীন শিশু চুরির অভিযোগ ফাঁস করেছিলেন বলেই তার উপরে অভিযুক্তদের রাগ। সে কারণেই চাপ দেওয়া হচ্ছিল। ২০ লক্ষ টাকা চেয়ে বাড়ির দলিল আটকে রেখেছিল সৈকত-সন্দীপেরা। আমি চাই পুলিশ তদন্ত নিরপেক্ষ ভাবে করুক, সৈকত চট্টোপাধ্যায়দের গ্রেফতারি চাই। না হলে এরা সব তথ্যপ্রমাণ লোপাট করবে এবং আমার ভাই-ভাতৃবধূর মতো বহু পরিবার ছারখার হয়ে যাবে।”
এ দিন জেলা যুব তৃমমূলের পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে সৈকত বলেন, “শিখা চট্টোপাধ্যায় নিজে গ্রেফতারির হাত থেকে বাঁচতে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে। কেন অপর্ণা ভট্টাচার্যের মেয়ে অভিযোগ করল না, কেন ফুলবাড়ি থেকে শিখা চট্টোপাধ্যায় এসে অভিযোগ করল সেটাই প্রমাণ করে, এটা যড়যন্ত্র।” সৈকতের দাবি, “অর্পণা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী আমার কাছে এসেছিলেন, অর্পণা ভট্টাচার্যও এই অফিসে এসেছিলেন। আমি আইনজীবী হিসেবে বিষয়টি নিজেদের মতো মিটিয়ে নিতে বলেছিলাম। তার সব প্রমাণ আছে। পুলিশ যদি তদন্তে আমার দোষ প্রমাণ করতে পারে তা হলে আমি নিজেইগ্রেফতারি বরণ করব।”
জেলা বিজেপির সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “আমরা সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছি।”
পুলিশ সুপার খান্ডাবাহালে উমেশ গণপত বলেন,"দম্পতি'র অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy