নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে বাম নেতাদের সঙ্গে বিজেপির বিধায়ক। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
পুরভোটের আগে আলিপুরদুয়ারে বাম-বিজেপিকে ‘কাছাকাছি’ আনল নেতাজির জন্মদিনের অনুষ্ঠান। রবিবার নেতাজি সুভাষ জন্ম শতবর্ষ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলার বাম নেতাদের মাঝে হাজির হলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। নেতাজির মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি বাম নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতেও দেখা যায় বিধায়ককে। যা নিয়ে শহরজুড়ে শুরু হয়েছে চর্চা। পরে এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতা তথা আলিপুরদুয়ার পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান বাবলু করও যান।
অথচ, এত দিন বিজেপি বা তৃণমূল তো বটেই, আলিপুরদুয়ার শহরে নেতাজি সুভাষ জন্ম শতবর্ষ কমিটির এই অনুষ্ঠানে প্রাক্তন আরএসপি বিধায়ক নির্মল দাস ছাড়া জেলা বামফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদেরও উপস্থিত হতে দেখা যায় নি বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারাই। তাঁদের কথায়, ১৯৯৭ সালে বিধায়ক থাকাকালীন নির্মলকে আহ্বায়ক করেই নেতাজি জন্ম শতবর্ষ কমিটি তৈরি হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে শহরের টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ও পূর্ত দফতরের বাংলোর কাছে নেতাজির মূর্তি বসে। তখন থেকে এই কমিটি ২৩ জানুয়ারি ওই মূর্তির পাদদেশে নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালন করে আসছে। আর জেলা বামফ্রন্ট কোর্ট মোড় সিপিএম পার্টি অফিসের কাছে নেতাজির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছিল।
আলিপুরদুয়ারের প্রবীন সিপিএম নেতা কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জন্মদিনে নেতাজিকে তাঁর মূর্তির পাদদেশে গিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সিদ্ধান্ত এ বার দলের তরফেই নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী নেতাজি সুভাষ জন্ম শতবর্ষ কমিটির অনুষ্ঠানে আমরা যাই।’’ প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস বলেন, ‘‘বাম শীর্ষ নেতৃত্ব এ বার প্রথম এলেও, ফ্রন্টের বিভিন্ন গণ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কিন্তু প্রতি বারই আমাদের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।’’
তবে নেতাজি সুভাষ জন্ম শতবর্ষ কমিটির এ বারের অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বড় চমক ছিল, আচমকাই আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের সেখানে হাজির হওয়া। সূত্রের খবর, এ দিন বেলা এগারোটা নাগাদ বাম শীর্ষ নেতৃত্ব অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তার কিছু সময় বাদেই বাম নেতৃত্বের মাঝে উপস্থিত হন বিজেপি বিধায়ক। রাজনৈতিক মহলের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনে কার্যত গোটা রাজ্যেই বামেদের ভোটে থাবা বসিয়েছিল বিজেপি। যার ব্যাতিক্রম হয়নি আলিপুরদুয়ারেও। এই অবস্থায় আলিপুরদুয়ারে পুরভোটের আগে নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে বিজেপি বিধায়কের হাজির হওয়ার ঘটনায় চর্চা শুরু হয়েছে। সুমন অবশ্য বলেন, ‘‘নেতাজি কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পদ নন। তিনি দেশের বীর সন্তান। সেজন্যই এদিন আলিপুরদুয়ার শহরে নেতাজির সব মূর্তিতে মাল্যদান করার সিদ্ধান্ত নেই। সেই সূত্রেই নেতাজি সুভাষ জন্ম শতবর্ষ কমিটির অনুষ্ঠানেও গিয়েছি। এর সঙ্গে ভোট বা রাজনীতির সম্পর্ক নেই।’’ প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল বলেন, ‘‘নেতাজিপ্রেমী সব মানুষই আমাদের এ দিনের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। সেই সূত্রে শুধু বিজেপি বিধায়কই নন, পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যানও এ দিন আমাদের অনুষ্ঠানে আসেন।’’ প্রবীণ সিপিএম নেতা কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কলকাতাতেও তো নেতাজির একটি মূর্তিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy