Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বাবার মৃত্যুতেও বাড়ি ফেরা হল না ছেলের

প্রশাসন সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার জেলায় মোট ১১টি হিমঘর রয়েছে। মার্চের গোড়ার দিকে এই হিমঘরগুলিতে আলু রাখার কাজ শুরু হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২০ ০৬:৩৭
Share: Save:

বাবা মারা গিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে সেই খবর পেয়েওছিলেন। কিন্তু রেড জ়োনের আওতায় বাড়ি হওয়ায় সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। ফলে বাবাকে শেষ দেখার সুযোগও পাননি হাওড়ার ভগবানপুর গ্রাম থেকে ফালাকাটার হিমঘরে কাজ করতে আসা বাসুদেব অধিকারী। তবে একা নন। তাঁর মতো হাওড়া থেকে কাজ করতে আসা আরও ত্রিশ জন শ্রমিকও এই মুহূর্তে আটকে ফালাকাটার দুটি হিমঘরে। তাঁরা কখনও হাওড়া প্রশাসন, তো কখনও আলিপুরদুয়ার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউই বাড়ি ফেরানোর আশ্বাস দিতে না পারায় চরম সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার জেলায় মোট ১১টি হিমঘর রয়েছে। মার্চের গোড়ার দিকে এই হিমঘরগুলিতে আলু রাখার কাজ শুরু হয়। ওই সব হিমঘর কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরই এই কাজ মূলত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শ্রমিকেরা করে থাকেন। কিন্তু এ বার হিমঘরে আলু রাখার কাজ চলাকালীনই গোটা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও লকডাউন শুরু হয়ে যায়। যার জেরে এপ্রিলের শুরুতে হিমঘরে আলু মজুতের কাজ শেষ হয়ে গেলেও আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকায় আটকে পড়েন দক্ষিণবঙ্গের প্রায় দু’হাজার শ্রমিক।

দীর্ঘদিন বাড়িঘর ছেড়ে হিমঘরে আটকে থাকায় আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকেরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। কোথাও কোথাও শুরু হয় বিক্ষোভও। সূত্রের খবর, এরপর আলিপুরদুয়ার জেলায় আটকে পড়া ওই শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। প্রচুর সংখ্যায় বাসে করে তাদের দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় নিজেদের বাড়ির এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, হাওড়ার বাসিন্দা ত্রিশজন শ্রমিক এখনও আটকে ফালাকাটার দুটি হিমঘরে। যাঁদের একজন বাসুদেব অধিকারী। নিজের বাবার মৃত্যুসংবাদ সঠিক সময়ে পেলেও তাঁকে শেষ দেখা দেখতে যেতে পর্যন্ত পারেননি।

বাসুদেবের কথায়, “লকডাউন চলছে। সেই কবে থেকে ফালাকাটায় হিমঘরে আটকে রয়েছি। বাড়ির অন্যতম উপার্জনকারী আমিই। অথচ, লকডাউনের সময়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারলাম না। এমনকি, সম্প্রতি বাবা মারা যাওয়ার পর তাঁকেও দেখতে যেতে পারলাম না। বাবাকে শেষ দেখতে চেয়ে অনেককেই বললাম। কিন্তু সকলে বললেন, হাওড়া না কি রেড জ়োনে রয়েছে। তাই অনুমতি নেই। আমি কবে বাড়ি ফিরব তাঁর অপেক্ষায় বাড়ির সকলেই। অথচ, প্রশাসনও কিছু বলছে না। ফালাকাটার আরেকটি হিমঘরে আটকে থাকা অয়ন মান্না বলেন, “আমরা আলিপুরদুয়ার ও হাওড়া জেলা প্রশাসনের উভয়ের সঙ্গেই যোগাযোগ করছি। কিন্তু আমাদের বাড়ির ফেরার ব্যাপারে কেউ সদুত্তর দিতে পারছেন না।”

ফালাকাটার বিডিও সুপ্রতীক মজুমদার বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের তরফে হাওড়া প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আমরা সবুজ সংকেত পেলেই প্রত্যেককে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy