বন্ধুত্ব: কুকুরদের খাওয়াচ্ছেন আনিজ মিয়াঁ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
মাথার উপর ছাদ নেই। ফুটপাতেই কেটে যায় রাত। লকডাউন চলছে, তাই ভ্যান চালিয়ে আগের মতো রোজগারও হয় না। শুধুমাত্র হোম ডেলিভারির খাবার পৌঁছে দিয়ে যে সামান্য কিছু টাকা মেলে, তা দিয়ে নিজের দু’বেলা খাওয়ার সংস্থানটুকু হয়। কখনও সেটাও হয় না। স্বেচ্ছাসেবীদের দেওয়া খাবার খানিকটা ভরসা। কিন্তু তাতেও ভোলেননি বন্ধুদের কথা। নিয়ম করে রোজ খাবার কিনে দিচ্ছেন আনিজ মিয়াঁ। বন্ধুরা অবশ্য চারপেয়ে। প্রত্যেকটিই পথকুকুর।
আনিজ জানান, কোচবিহারের টাপুরহাট এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতেন তিনি। বছর তিনেক আগে শহরের দেশবন্ধু মার্কেটে কাজের খোঁজে আসেন। ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার হত তাতে পথকুকুরদের খাইয়ে নিজের দিব্যি চলে যেত। লকডাউনের পরে সেই দিন গিয়েছে। সকালে হোম ডেলিভারির কিছু খাবার পৌঁছে দিয়ে সামান্য কিছু টাকা মেলে। তাতে নিজের পেট চালানোই মুশকিল। তার পরেও রুটিন বদলাননি তিনি। বলেন, “রাতে বাজার লাগোয়া এলাকার ফুটপাতে, দোকানের ছাউনির নীচে ঘুমোই। আশেপাশের অন্তত ১০-১২টি কুকুর সন্ধ্যে গড়ালে আমাকে দেখলেই ছুটে আসে। এমনটা প্রায় তিন বছর চলছে। ওদের খেতে না দিলে ঘুম হবে না আমার!”
আর রোজগার? আনিজের কথায়, "কোনওদিন ৪০-৫০টাকা। কোনওদিন ১০০। খাবার পৌঁছে ৪০-৫০ মিললে সেটা কুকুরদের জন্যই রেখে দিই। আমাকে সেদিন ক্লাব বা অন্য সংস্থার খাবারের উপর ভরসা করে কাটাতে হয়।’’
কোচবিহারের দেশবন্ধু মার্কেট লাগোয়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার কথায়, ‘‘লকডাউনের মরসুমে অনেকেই পথ কুকুরদের খাবার দিচ্ছেন। তবে আনিজ কেবল আজ নয়, প্রায় তিন বছর ধরে নিজের সামান্য রোজগারের প্রায় অর্ধেক টাকায় পথ কুকুরদের খাবার কেনেন। দুর্দিনেও তা বদলায়নি।’’
শিক্ষক ইন্দ্রনীল সরকার থেকে ব্যবসায়ী বাপ্পা বণিক পর্যন্ত সকলেই স্বীকার করছেন, ‘‘এমন ভালবাসা বেনজির।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy