করজোড়ে: শিলিগুড়ি পাতি কলোনি এলাকায় একটি শেল্টার হোমে পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
কনটেনমেন্ট জ়োন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া আবাসন কমপ্লেক্স। গেট বন্ধ। মাঝেমধ্যে গাড়ি আসা-যাওয়া করছে। গেটের সামনে আনাজ-ফলের দু’তিনটি দোকান। পুলিশ, নিরাপত্তাকর্মীরা গেটের এক দিকে স্যানিটাইজার এবং কে আসছেন-যাচ্ছেন, তার নথি নিয়ে বসে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সেখানে পৌঁছয় উত্তরবঙ্গে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। উত্তরবঙ্গে সফরে আসার তিন দিন পর এ দিনই দলটি প্রথম পরিদর্শনে যায়।
এখানে কতগুলো আবাসন রয়েছে? কত মানুষ থাকেন? তাঁদের খাবারের জোগান কী ভাবে হচ্ছে? এ সব জানতে চান দলের নেতৃত্বে থাকা বিনীত জোশী। সঙ্গে থাকা মাটিগাড়ার বিডিও রুনু রায় জানান, ৫১২টি প্ল্যাট রয়েছে, ২০৪০ জন বসবাস করেন এবং তাঁদের আনাজ, দুধ দেওয়া হচ্ছে। আনাজ ভিতরে ঢুকে দিয়ে আসা হয় কি না, জানতে চান বিনীত জোশী। বিডিও জানান, গেটের বাইরে আনা সামগ্রী বাসিন্দারা নিয়ে যান। সরবরাহকারীদের ফোন নম্বর বাসিন্দাদের দেওয়া আছে বলে জানান তিনি। জানতে চাওয়া হয়, এ দিন কতজন আবাসন থেকে বেরিয়েছেন? সংখ্যাটা দুপুর পর্যন্ত ৯২ শুনে চিন্তিত মুখে বিনীত বলেন, ‘‘কত শতাশ তা হলে? সাড়ে চার শতাংশ!’’ বিডিও জানান, আবাসনে অনেক চিকিৎসক, নার্স রয়েছেন বলে জরুরি পরিষেবায় তাঁদের বেরতে দিতে হচ্ছে।
সেখান থেকে প্রতিনিধি দলের কনভয় মাটিগাড়া, মাল্লাগুড়ি হয়ে শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনের কাছে ১ নম্বর ওয়ার্ডে রেলের বাণীমন্দির স্কুলের পরিয়ায়ী শ্রমিকদের থাকার জায়গায় পৌঁছয়। বিনীত জোশী জানান, দু’টি জায়গায় তাঁরা লকডাউন পরিস্থিতি, কোয়রান্টিন কেন্দ্র, হাসপাতালের ব্যবস্থা দেখেছেন এবং রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
কলকাতা এবং উত্তরবঙ্গে আসা কেন্দ্রের দু’টি প্রতিনিধি দল নিয়ে আগে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। কেন রাজ্যের সঙ্গে কথা না-বলে প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর শুরু হয়। বুধবার পরিস্থিতি বদলায়। রাজ্যের তরফে জানানো হয়, সমস্ত সাহায্য করা হবে। এর পরই এ দিন কলকাতায় এবং উত্তরবঙ্গে পরিদর্শনে বার হয় প্রতিনিধি দল। বিনীত জোশী বলেন, ‘‘আজ থেকে কিছু সহায়তা মিলছে। বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারছি।’’ এ দিন দু’টি জায়গায় ঘুরে কী পরিস্থিতি দেখলেন? বিনীত বলেন, ‘‘এখনই বলা কঠিন। আমরা খোঁজখবর নিয়ে জানার চেষ্টা করছি।’’ রাজ্যের বিরুদ্ধে তথ্য লুকোনোর অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের কাছে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট চেয়েছি।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া আবাসন কমপ্লেক্সে এক নার্স, তাঁর স্বামী, শিশুসন্তান এবং মা করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ওই আবাসন কমপ্লেক্সটিকে কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। বাণীমন্দির স্কুলে বাইরের ৬৮ জন শ্রমিকদের রাখা হয়েছে। সেখানে থাকা উত্তরপ্রদেশের ঔরঙ্গাবাদের বাসিন্দা হসনু প্রসাদ জানান, তাঁর আত্মীয়-পরিজনের ২৫ জন রয়েছেন। এর মধ্যে শিশু চার জন। তাঁদের চাল, আটা, তেল, সাবান দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখন কিছু সমস্যা হচ্ছে। লকডাইন উঠলে দেশ চলে যাব।’’ দেড় ঘণ্টা পরিদর্শনের পর প্রতিনিধি দলটি রানিডাঙায় এসএসবি গেস্টহাউসে ফিরে যায়। শীঘ্রই দলটির কালিম্পং যাওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy