Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coornavirus

নার্সিংহোমের দাবিতে ধন্দ

করোনা রোগীকে মিনিটে ৯০ থেকে ৯৫ লিটার অক্সিজেন দেওয়ার দাবি

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২১ ০৬:১৩
Share: Save:

করোনার চিকিৎসায় নার্সিংহোমের বিল নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। ২৪ ঘণ্টায় এক করোনা রোগীর লক্ষাধিক টাকা বিলের অভিযোগ রয়েছে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। এ বারে অক্সিজেন নিয়েও কারচুপির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।

কোচবিহারে অক্সিজেন ব্যবহারে নজরদারির জন্য একটি কমিটি তৈরি করেছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। সেই অক্সিজেন অডিট কমিটিতে নিয়মিত হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট জমা দিতে হয়। সেখানে শহরের একটি নামী নার্সিংহোম যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, তা দেখে অবাক হয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের অনেকেই। ওই রিপোর্টে বেশ কয়েকজন রোগীর ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে, প্রতি মিনিটে তাঁদেরকে ৯০ লিটার থেকে ৯৫ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। যা সম্ভব নয় বলেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক নার্সিংহোম ওই রিপোর্টে দাবি করেছে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে রোগীকে মিনিটে ৪০-৪৫ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। ভেন্টিলেশন ছাড়া কী ভাবে তা সম্ভব, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

কোচবিহার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রণজিৎ ঘোষ বলেন, “ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীর ক্ষেত্রে খুব বেশি হলে প্রতি মিনিটে ৫০ থেকে ৬০ লিটার অক্সিজেন দেওয়া যেতে পারে। তার বেশি রিপোর্টে থাকলে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত করোনা রোগীকে প্রতি মিনিটে তিন থেকে ১৫ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হয়। ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্য ৫০ থেকে ৬০ লিটার অক্সিজেন দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু প্রশাসনের কাছে পাঠানো রিপোর্টে, ওই নার্সিহোমের দাবি মতো রোগীকে মিনিটে ৯০ লিটার থেকে ৯৫ লিটার অক্সিজেন দেওয়া নিয়ে ধন্দ ছড়িয়েছে।

করোনার প্রকোপে এ বারে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। কোচবিহারে করোনা বাড়তে শুরু করলে অক্সিজেন অডিট কমিটি তৈরি করা হয়। ওই কমিটি অক্সিজেন সিলিন্ডার সংক্রান্ত সব তথ্য প্রতিদিন মজুত করতে শুরু করে। তাতে কোথায় কত অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে, তার মধ্যে প্রতিদিন কত ব্যবহার হচ্ছে সেই সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করা হতে থাকে। ওই নার্সিংহোমের রিপোর্ট নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি দেখিয়ে, হয় বিল বেশি করা হচ্ছে, নতুবা অক্সিজেন নষ্ট করা হচ্ছে। ঘটনা যেটাই হোক না কেন, এই সময়ে তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রণজিৎ ঘোষ জানান, নার্সিংহোম সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।

কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “আমরা নার্সিংহোমের মাত্রাছাড়া বিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নানা অভিযোগ পেয়েছি। কী করে অল্প সময়ের মধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা বিল করা হচ্ছে? আমাদের দৃঢ় সন্দেহ এখন প্রাণবায়ুও চুরি হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।”

কোচবিহারে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ন’টি চিকিৎসাকেন্দ্রে করোনা রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে। অভিযোগ উঠছে, বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে করোনার চিকিৎসায় অসুস্থ মানুষের অসহায়, বিহ্বল অবস্থার সুযোগ নিয়ে মাত্রাছাড়া চিকিৎসার খরচ নেওয়া হচ্ছে।

এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ থেকে ৯৪ শতাংশ থাকলে অক্সিজেন নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। যাঁরা শ্বাসতন্ত্রের রোগে ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি রাখতে হয়। তিনি বলেন, “কাকে কতটুকু অক্সিজেন দেওয়া হবে তা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঠিক করেন। এই ক্ষেত্রে যাঁর পরামর্শে ওই পরিমাণ অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, তাঁর সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্তারা কথা বললেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Coornavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy