শতবর্ষ পেরনো জ্যোৎস্নাদেবী।
বয়সে কী এসে যায়। সেটা তো শুধু সংখ্যা মাত্র। এমনটাই মনে করেন শিলিগুড়ির ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জোৎস্নাবালা মজুমদার। ১০৪ বছর বয়স তাঁর। করোনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে টিকাও নিয়ে নিয়েছেন। এখন পরিবার, প্রতিবেশী সকলকে টিকা নেওয়ার কথা বলছেন।
শতবর্ষ পার করেও তিনি দিব্যি হাঁটাচলা করেন। বাড়িতে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করেন। গত সপ্তাহে করোনা টিকা নিয়েছেন। তাঁর জন্য বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থা করেছিলেন ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সদস্যরা। টিকা নিয়ে সামান্য জ্বরও আসেনি। হাতে ব্যথা থাকলেও তাঁর কথা, ‘‘ছোটবেলা থেকে অনেক ইঞ্জেকশন নিয়েছি। এখন আর এ সবে ভয় করে না।’’ একসময় কলকাতায় থাকতেন তাঁরা। ১৯৫৫ সালে স্বামীকে হারিয়েছেন জোৎস্না দেবী। চার ছেলেমেয়েকে বড় করে তুলেছেন। এর পর শিলিগুড়ি এসেছেন। নাতি-নাতনিদের নিয়ে এখন সুখের সংসার জোৎস্না দেবীর। কিন্তু হঠাৎ আসা করোনা যেন তাঁর বাড়ির বাইরে যাওয়ায় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে।
দোতলায় জানালা দিয়ে রোজ বাইরে তাকিয়ে থাকেন। আশায় থাকেন কবে দূর হবে করোনা। সুস্থ হবে পৃথিবী। জোৎস্না দেবীর ছেলে মৃণালকান্তি মজুমদারের কথায়, ‘‘মা এখন আমাদের থেকেও বেশী সুস্থ। হাইপ্রেসার থাকলেও নিয়মিত ওষুধও খেতে হয়না। আর অন্য কোনও রোগ নেই। করোনা তো তাঁকে ছুঁতেও পারেনি। তবুও মা'কে সুস্থ রাখতে করোনার সময়ে বেশী লোককে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয় না।’’ তবে প্রতিবেশীদের কাছে জোৎস্না দেবী রীতিমতো অনুপ্রেরণা। এই বয়সেও তিনি কীভাবে সুস্থ থাকেন তা জানতে অনেকেই ছুটে আসেন। পুরোনো দিনের গল্প শোনেন। আবার তিনি কী খাবার খান তা নিয়েও খোঁজ নেন।
এ দিকে চিকিৎসকের দেওয়া ডায়েট অনুযায়ী খাবার খান তিনি। দিনে একবার ভাত। বাকি সময় ফল, খই, মুড়ি এসবই খান। জোৎস্নাবালা মজুমদারের কথায়, ‘‘বাড়িতে সকলের সঙ্গে থাকি। গল্প করি। করোনা তাড়াতাড়ি চলে যাক তাই চাই। আমি টিকাও নিয়েছি। পরিবারের সকলকে বলেছি টিকা নিতে।’’
ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনোজ ভার্মা বলেন, ‘‘মজুমদার পরিবার আমাদের কাছে সত্যিই অনুপ্রেরণা। অনেক জায়গায় দেখি বাড়িতে বৃদ্ধ কেউ থাকলে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জোৎস্না দেবীকে যতটা যত্ন করে পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে রাখেন তা হয়তো খুব কম মানুষই করে। তাঁর দ্বিতীয় ডোজের টিকার ব্যবস্থাও আমরা করে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy