Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Ajay Kumar Bhalla

পত্রাঘাতে উত্তরকে জুড়ল দিল্লি

৬ মে, বুধবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে চিঠিটি পাঠান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। ছবি: সংগৃহীত

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২০ ০৭:১৫
Share: Save:

কেন্দ্রীয় দল দিল্লি ফেরার দু’দিনের মধ্যে রাজ্যকে পত্রাঘাত করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক। সেখানে সামগ্রিক ভাবে গোটা রাজ্য তো বটেই, বিশেষ করে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উত্তরবঙ্গ নিয়েও রাজ্যের সমালোচনা এবং নির্দেশের উল্লেখ করা হয়েছে।

৬ মে, বুধবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে চিঠিটি পাঠান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। সেখানে এক দিকে যেমন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত এবং ঠিকঠাক পিপিই কিটের ব্যবস্থা এবং নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে, পাশাপাশি পাহাড়ে নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা বা চা বাগানের শ্রমিকদের যাতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, সে ব্যাপারেও ‘নির্দেশ’ দেওয়া হয়েছে। অজয় তাঁর চিঠিতে বলেছেন, লকডাউনের প্রথম পর্বে চা বাগানের শ্রমিকরা কম মজুরি পেয়েছে বলেই কেন্দ্রের কাছে খবর এসেছে। সেই ব্যাপারেই ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। এই চিঠির প্রসঙ্গে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলছেন, ‘‘এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় দলটি কী উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে এসেছিল।’’ রাজ্যের প্রশাসনের উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষস্থানীয় কর্তাব্যক্তি বলেন, ‘‘কেন্দ্র যে বিষয়গুলি বলেছে, তা অবান্তর।’’

চিঠিতে পাহাড়ে নমুনা পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পাহাড় থেকে নমুনা শিলিগুড়িতে নিয়ে এসে পরীক্ষা করতে গেলে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তাঁর সংস্পর্শে কারা এসেছেন, সেই কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। তার ফল মারাত্মক হতে পারে। এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা বিশেষ স্বাস্থ্য আধিকারিক সুশান্ত রায় জানান, এ দিনই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে জিটিএ প্রতিনিধিরাও ছিলেন। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। বস্তুত, এ দিন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে জিটিএ-র সঙ্গে সুশান্তবাবুর সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, জিটিএ-র চেয়ারম্যান অনীত থাপা, জিটিএ-র প্রধান সচিব, পুলিশ সুপার-সহ অনেকেই। সেখানেই পাহাড়ের জন্য আলাদা পরীক্ষা ব্যবস্থার দাবি উঠেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় দল দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে গিয়ে সুপারের সঙ্গে যে্ বৈঠক করেন, সেখানেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সময় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কার কথা তখনই তাঁরা জানতে পারেন। মনে করা হচ্ছে, তাই পাহাড়ে আলাদা ল্যাবরেটরি চালুর কথা নিজেদের রিপোর্টে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। প্রয়োজনে কালিম্পং এবং দার্জিলিঙে আলাদা ল্যাবের জন্য তারা জানায়। সুশান্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে।’’ তবে তাঁর দাবি, এ ধরনের ল্যাবরেটরির পরিকাঠামো এবং ব্যবস্থা করতে কিছুটা সময় লাগবে। মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘পাহাড়ে কোভিড সেন্টার রয়েছে। জিটিএ এবং সরকার যে ভাবে কাজ করছে, তাতে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ায়নি। টেস্টিং সেন্টারের বিষয়টি রাজ্য সরকার প্রয়োজন মনে হলে নিশ্চয়ই দেখবে।’’

অজয়ের চিঠিতে চা বাগানের প্রসঙ্গও রয়েছে। লকডাউন শুরুর পরে সপ্তাহ দুয়েক চা বাগান পুরোপুরি বন্ধ ছিল। তার পরে ধাপে ধাপে প্রথমে বাগানে কীটনাশক ছড়ানো এবং পাতা তোলার অনুমতি দেওয়া হয়। বাগান খোলা নিয়েও কেন্দ্রের সঙ্গে শুরু থেকেই রাজ্যের টানাপড়েন লেগে ছিল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রের দাবি, লকডাউন শুরুর পর থেকেই চা শ্রমিকদের যাতে যথাযথ মজুরি দেওয়া হয়, তার জন্য চা মালিকদের ওপর চাপ রাখা হয়েছিল। দু-একটি বাগানে কম মজুরি দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়েছে। চা শ্রমিকদের আগে থেকেই বিনে পয়সায় রেশনও দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি রাজ্য। রাজ্য প্রশাসনের উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘বাগান নিয়ে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে, তা কেন্দ্র আগে জানতে চায়নি। এখন না জেনেই চিঠি লিখে দিয়েছে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Ajay Kumar Bhalla Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE