অপেক্ষা: খাবারের আশায়। নিজস্ব চিত্র
শনিবার রাত থেকে শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। রবিবার ভোর পর্যন্ত চলে তা। এক ধাক্কায় নামে তাপমাত্রার পারদ। তার উপরে এ দিন সকাল থেকে ঠান্ডা বাতাস বইতে থাকায় ফের শীতের আমেজ। তার জেরে বালুরঘাটে ‘জনতা কার্ফু’তে বিছানার গরম চাদর ও কম্বলেই আটকেছিলেন শহরের নাগরিকেরা।
বালুরঘাটের ধু ধু রাস্তায় শুধু পথকুকুরের দল ভোর থেকে ঘুরল রাস্তার মোড়ে, পরিচিত হোটেল রেস্তোরাঁর সামনে। রাস্তায় হাতেগোনা সিভিককর্মী ছাড়া কাউকে চোখে পড়েনি। রাস্তায় জমা বৃষ্টির জল, বাতাসে খসে পড়া আমের মুকুল ও গাছের পাতায় বেলা বাড়ল। এক রাস্তা থেকে আরেক রাস্তার মোড়ে পথকুকুরের আনাগোনা তখন বেড়েছে। সুনসান শহরে ঝাঁপ বন্ধ চা ও মিষ্টির দোকানেরও। পরিচিত এলাকা যেন অচেনা ঠেকল সারমেয়দের কাছে। সকাল থেকে চায়ের দোকানের পরিচিত ভিড় উধাও। উধাও তাদের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া বিস্কুটের টুকরো।
সকালে শহরের সাধনা মোড়ে কয়েকটি পথকুকুর খানিক ঘুরপাক খেয়ে পা চালাল সাড়ে তিন নম্বর মোড়ের দিকে। ওখানে একাধিক চা, হোটেল দোকান থেকে রোজ কিছু না কিছু তাদের মিলেই যায়। তবে এ দিন কোনও খাবার জোটেনি তাদের।
সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলেও দু’কান দুলিয়ে কালো, ধূসর ও খয়েরি রঙের রোগা হাড় জিরজিরে শরীর নিয়ে এক রাস্তার মোড় থেকে অন্য রাস্তার মোড়ে ছুটে চলাই সার হল তাদের। দিনমজুরের কর্মহীন বে-রোজগার দিনের পাশাপাশি খালি পেটে কাটাতে হল পথকুকুরদেরও।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘জনতা কার্ফু’ পালনের আবেদনে বাসিন্দাদের ‘অভূতপর্ব’ সাড়া মেলার আড়ালে থেকে গেল বালুরঘাট শহরের শতাধিক কুকুরের না খেয়ে কাটানোর কথা।
পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ বসাকের কথায়, ‘‘অন্য সব বন্ধ ও ধর্মঘটের রেকর্ড ভেঙে এ দিন দোকান-বাজার তো বটেই, একটি চায়ের দোকানও খোলা ছিল না।’’ তাঁর মতোই শহরের কয়েক জন পশুপ্রেমী নাগরিকের বক্তব্য, মানুষকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে ঐকবদ্ধ হতে শেখাল ‘জনতা কার্ফু’। কিন্তু অবলা জীবের প্রতি মানুষের দায়িত্ব এ দিন কোথাও যেন বিঘ্নিত হল। মানুষের দেওয়া খাবারের উপরে নির্ভরশীল পথকুকুরদের চাউনির বিষন্নতা দেখে মনখারাপ থেকেই গেল তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy