আশ্রয়: শিবিরে বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র
কারও ঘরে জল ঢুকেছে। কারও দাওয়া জলে থইথই। তার পরেও নদীর জলের স্তর বেড়েই চলেছে। ঝুঁকি না নিয়ে তাই রাতেই ঘর ছেড়েছেন আমিনা, নুরউদ্দিনরা। কোচবিহারের তোর্সা নদী সংলগ্ন এলাকায় তাঁদের ঘর। এর পর থেকে স্কুল ঘরেই দিন কাটছে ওঁদের। রবিবার দিনভর তাঁদের খোঁজখবর নিল প্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতারা।
শনিবার দুপুর থেকেই জল বাড়তে শুরু করেছিল কোচবিহারের তোর্সা নদীতে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হতেই সেই জল শহর সংলগ্ন বড়ুয়াপাড়া গ্রামে ঢুকে পড়ে। নদীর কাছাকাছি থাকা বাড়িগুলির ঘরের ভিতরেও জল ঢুকে পড়লে কেউ আর কোনও ঝুঁকি নেননি। গ্রামের প্রায় ৪০ জন বাসিন্দা আশ্রয় নেন একটি প্রাথমিক স্কুলে। গোটা জেলায় কয়েকশো মানুষ এমন ভাবেই ত্রাণ শিবিরে রাত কাটিয়েছেন। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, “আমরা সমস্তরকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” ওই ত্রাণ শিবিরে গিয়েছিলেন এলাকার বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তিনি বলেন, “কারও যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, তা দেখা হচ্ছে।”
কোচবিহার নদী দিয়ে ঘেরা জনপদ। তোর্সা, তিস্তা, মানসাই, রায়ডাক, ধরলা থেকে শুরু করে নানা নদী গ্রাম-শহর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। নদীর পাড়ে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। তার মধ্যে বহু এলাকা অসংরক্ষিত। প্রতিবছর ওই এলাকাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। মাঝে মাঝে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ বারে দিন কয়েক ধরে টানা বৃষ্টি চলছে। তাতে নদীর জল বাড়ে।
তোর্সা নদীর পাশের ওই গ্রামে জল ঢুকে পড়ে। শহর সংলগ্ন বাঁধের নীচে অনেক বাসিন্দার বাড়ি। সেই বাড়িগুলিতেও জল ঢুকে পড়েছে। নুরউদ্দিন জানান, সন্ধ্যে পর্যন্ত তাঁরা গ্রামে অপেক্ষা করেছেন। জল বাড়ছে দেখে শেষপর্যন্ত গ্রাম ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, “বাড়িতে বাড়িতে ছোট ছোট শিশু রয়েছে। একবার জল বেড়ে গেলে তখন খুবই অসুবিধের মধ্যে পড়তে হত।” রাতেই প্রশাসনের তরফ থেকে ওই বাসিন্দাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
রবিবার সকালে ওই বাসিন্দাদের জন্য খিচুড়ি, তরকারির ব্যবস্থা করা করা হয়। আমিনা বলেন, “খাবারের কোনও অসুবিধে হয়নি। ঘরবাড়ি ঠিক থাকবে কি না তা নিয়েই চিন্তা।”
ওই এলাকায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও ওই এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের খোঁজ নেওয়া হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি যে সব এলাকায় তৈরি হয়, সেখানে ফ্লাড সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া নৌকার ব্যবস্থাও থাকছে। যাতে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে তা ব্যবহার করা যায়। কোচবিহারের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “ত্রাণশিবিরে যাতে খাবারের কোনও সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে লক্ষ রাখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy