পাকা বাড়ি রয়েছে। তার পরেও অন্যের বাড়ি দেখিয়ে আবাস যোজনায় প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন। এমন অভিযোগে চার উপভোক্তার টাকা ফেরাল কোচবিহার জেলা প্রশাসন। চার জনই কোচবিহার ২ ব্লকের বাসিন্দা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উপভোক্তাদের তালিকায় নাম থাকায় অন্যদের সঙ্গে ওই চার জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা জমা পড়ে। পরে ‘সুপার চেকিং’-এর সময় গোলমাল ধরা পড়ে। অভিযোগ, নিজেদের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তথ্য গোপন করে অন্যের বাড়ি দেখিয়েছিলেন ওই চার জন। তা খতিয়ে দেখার পরে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। প্রত্যেকের থেকে প্রদেয় টাকা ফেরানোও হয়েছে।
কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সৌমেন দত্ত বলেন, ‘‘সুপার চেকিংয়ে অসঙ্গতি নজরে আসার পরে উপভোক্তা তালিকায় থাকা চার জনকে দেওয়া প্রথম কিস্তির টাকা ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজে কড়া নজরদারি রয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় এক লক্ষ ৩৩ হাজার ৭৪৭ জন বাসিন্দা আবাসের প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন। উপভোক্তারা ঠিক মতো কাজ শুরু করেছেন কি না তা জানতে শুরু হয় ‘সুপার চেকিং’। তাতে কোচবিহার ২ ব্লকের আমবাড়ি এলাকার এক বাসিন্দা নিজের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অন্যের বাড়ি দেখিয়ে প্রকল্পের সুবিধা নিয়েছেন বলে জানতে পারেন প্রশাসনের কর্তারা। ওই ব্লকের টাকাগছের এক বাসিন্দার ব্যাপারেও একই অভিযোগ ওঠে। দু’জনেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তড়িঘড়ি ‘ফ্রিজ়’ করে দেওয়া হয়। পরে কোচবিহার ২ ব্লকে আরও এমন দুই ঘটনা সামনে আসে। চারটি ক্ষেত্রেই টাকা ফেরানো হয়।
গোটা ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির অভিযোগ, আবাস যোজনায় প্রকৃত যোগ্যদের অনেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পাকা বাড়ি থাকার পরেও কারও নাম তালিকায় ওঠার কথা নয়। বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘প্রকৃত যোগ্যদের বঞ্চিত করে তৃণমূলের লোকজনের নাম তালিকায় রাখা হয়েছে। সে জন্য এমন ঘটনা ঘটেছে।নিখুঁত, নিরপেক্ষ তথ্য যাচাই হলে এমন ঘটনার আরও নজির প্রকাশ্যে আসবে বলে ধারণা।’’
অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। কোচবিহার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি তৃণমূলের আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, ‘‘দলমতের ঊর্ধ্বে ওই তালিকা করা হয়েছে। কোচবিহার ২ ব্লকে বিজেপির এক শীর্ষ জেলা নেতার আত্মীয়ের নামও তালিকায় রয়েছে। অপপ্রচারকরে লাভ হবে না। প্রশাসন সতর্ক আছে বলে ওই চার জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)