চিড়ে নিয়ে মন্তব্য় করে বিতর্কে কৈলাস বিজয়বর্গীয়। —ফাইল চিত্র
কথায় বলে ‘রোটি কাপড়া আওর মকান’। এর মধ্যে কাপড় দেখে হাঙ্গামাকারীদের চেনা যায় বলে রাজনৈতিক সভা থেকে আগেই নিদান দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বার হাত পড়ল ‘রোটিতেও’। বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়ে দিলেন, খাদ্যাভ্যাসে পোহা (চিঁড়ে) দেখে বাংলাদেশি চিনে ফেলেছেন তিনি। যা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে কোচবিহারের রাজবংশী ও নস্যশেখদের মধ্যে। ওই মানুষের প্রিয় খাবারের তালিকায় রয়েছে চিঁড়ে। দই-চিঁড়ে দিয়ে অনেক জায়গায় অতিথি’দের আপ্যায়ন করা হয়। সেই চিঁড়ে নিয়ে এমন মন্তব্য মেনে নিতে নারাজ তাঁরা। যা কিছুটা হলেও বিজেপিকে অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপি নেতাদের কেউ কেউ বলেন, “এমন আলটপকা মন্তব্য দলকে পিছিয়ে দিচ্ছে।”
চিঁড়ে নিয়ে কৈলাসের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ও। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, “কৈলাস বিজয়বর্গীয় ভারতবর্ষের মানুষের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ওয়াকিবহাল নন। উত্তর-পূর্ব ভারতের সব থেকে সংখ্যাধিক্য জনগোষ্ঠী রাজবংশী ও নস্যশেখ মুসলমান মানুষের প্রিয় খাবার চিঁড়ে। কৈলাসজি তো বহুবার কোচবিহার-সহ উত্তরবঙ্গে এসেছেন। রাজবংশী-সহ ভূমিপুত্রদের খাদ্যাভ্যাস জানেন না! এখানকার রাজবংশী ও নস্যশেখরা বাংলাদেশি নয়, ভূমিপুত্র।” স্থানীয়দের কেউ কেউ ফুট কেটেছেন, শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর প্রিয় খাবারের তালিকায় রয়েছে পোহা, কৈলাস কি সেটাও জানেন না!
বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা অবশ্য দাবি করেন, তৃণমূল ওই বিষয়ে রাজনীতি করছে। তিনি বলেন, “বিভিন্ন অঞ্চলের আলাদা আলাদা খাবার আছে। তা নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। কৈলাসজি কেন এমন মন্তব্য করেছেন, তা আমি ভাল করে জানি না। তবে এটুকু বলেতে পারি এটা কোনও বিতর্কের বিষয় নয়।”
গত বৃহস্পতিবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে আয়োজিত একটি সেমিনারে কৈলাস জানান, তাঁর বাড়িতে যে রাজমিস্ত্রিরা কাজ করছিলেন, তাঁদের মধ্যে কয়েক জনকে বাংলাদেশি বলে সন্দেহ হয় তাঁর। তাঁরা নিয়মিত পোহা (চিঁড়ে) খাচ্ছিলেন। সেই খাওয়ার অভ্যেস দেখে তাঁর বাংলাদেশি বলে সন্দেহ হয়। তিনি আরও জানান, সন্দেহ করার দু’দিন পরেই তাঁরা কাজ করা বন্ধ করে দেন। তিনি অবশ্য এখনও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাননি। কিন্তু সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছেন।
কোচবিহার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলা। এই জেলার রাজবংশী ও নস্যশেখ’দের প্রিয় খাবার চিঁড়ে। শুধু তা নয়, এই এলাকার বাসিন্দাদের একটি অংশের মানুষ লুঙ্গি পড়েন। তাই পোশাক নিয়ে মন্তব্যের পরেও একাংশ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছিল। কী ভাবে ‘লুঙ্গি’ দেখেই মানুষকে চেনা যায়, সেই প্রশ্নও উঠেছিল। নস্যশেখ সম্প্রদায়ের কাউসের আলম ব্যাপারী বলেন, “কখনও পোশাক দেখে মানুষ চেনার কথা বলছেন, কখনও খাবার দেখে। আতঙ্ক আছি, কখন ভাষা দেখে বাংলাদেশি চিনতে শুরু করবেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy