অধ্যক্ষের ঘরের কর্মীদের বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
রবিবার রাতেই আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা হয়েছিল৷ তারপরও মূল গেট কিংবা প্রশাসনিক ভবনের দরজা খোলা নিয়ে সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় নাটক চলল জলপাইগুড়ির সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে৷ শেষ পর্যন্ত দুপুর সওয়া বারোটা নাগাদ খুলল কলেজ৷ ভিতরে ঢুকলেন অধ্যাপকরা৷ কিন্তু এতদিন কলেজ অচল থাকায় পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ ভেবে উদ্বিগ্ন তাঁরা।
ছাত্রদের আন্দোলনের জেরে একটানা ১৭ দিন ধরে সম্পূর্ণ অচল ছিল জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ৷ শেষ কবে এমন আন্দোলন হয়েছিল তা মনে করতে পারছেন না কলেজের কেউ। টানা এত দিন ধরে কবে কলেজ অচল ছিল তা বলতে পারছেন না অধ্যাপক বা কর্মীরা৷ গত ১৫ মার্চ প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের দু’দল ছাত্রের মধ্যে গোলমালকে ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত৷
দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ এনেছিলেন প্রথম বর্ষের ছাত্ররা। অধ্যাপক দীপককুমার কোলে বাধা দেওয়ায় তাঁর অপসারণ দাবি করে পরের দিন থেকে কলেজে ধর্মঘট শুরু করেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা৷ পরে তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের কিছু পড়ুয়াও সামিল হন৷
এই অবস্থায় আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে উচ্চ শিক্ষা দফতর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে৷ রবিবার সার্কিট হাউজে বিভিন্ন বর্ষের পড়ুয়াদের পাশাপাশি পুলিশের কাছে র্যাগিং-এর অভিযোগ করা ছাত্র ও তাঁর অভিভাবক এবং অধ্যক্ষ-অধ্যাপকদের সঙ্গে কথা বলেন কমিটির সদস্যরা৷ আলাদা করে কথা বলেন দীপকবাবুর সঙ্গেও৷
রবিবার কলেজের ছাত্ররা একবার আন্দোলন তোলার কথা ঘোষণা করেন৷ কিন্তু আন্দোলনের বিপক্ষে থাকা একদল ছাত্র কমিটির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতেই সুর বদলান তাঁরা৷ রাতে ছাত্ররা জানান আন্দোলন প্রত্যাহার হয়েছে৷
এই অবস্থায় এ দিন সকাল দশটার আগেই কলেজে পৌঁছে যান অধ্যক্ষ, অধ্যাপক ও কর্মীরা৷ কিন্তু গত ১৭ দিনের মতো এ দিনও মূল গেটের পাশাপাশি প্রশাসনিক ভবনের সমস্ত দরজায় তালা দেওয়া ছিল৷ অধ্যক্ষ-অধ্যাপকরা মূল গেটের পাশে থাকা ছোট গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকেন৷ খবর পেয়ে কারিগরী বিভাগের উপ অধিকর্তা প্রণবেশ দাস কলেজে যান৷ তিনি তালা দেওয়া ভবনের ছবিও তুলে নেন৷ অধ্যক্ষ অমিতাভ রায় সাফ জানিয়ে দেন, “পরিস্থিতি যাই হোক, আমরা প্রশাসনিক ভবনে ঢুকবই৷”
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ শুরু করেন অধ্যাপকেরা৷ বেলা এগারোটা নাগাদ বিভিন্ন দরজার তালা খুলে দিতে শুরু করেন তাঁরা৷ চাবি হারিয়ে যাওয়ায় একটি তালা ভাঙা হয়৷ আন্দোলনকারী এক ছাত্র বলেন, বেলা সওয়া বারোটা নাগাদ প্রশাসনিক ভবনে ঢোকেন অধ্যক্ষ-অধ্যাপকরা৷ ঢোকেন দীপকবাবুও৷
অর্থ বর্ষ শেষের মুখে কলেজ অচল হওয়ায় উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের টাকা ইতিমধ্যেই ফেরত গিয়েছে৷ কলেজ এতদিন অচল থাকায় পড়ুয়াদের ইন্টার্নশিপ ও প্লেসমেন্টেও এর প্রভাব পড়বে বলে মত তাঁদের৷ অধ্যক্ষ অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘ক্ষতি মিটতে কত বছর লাগবে বুঝতে পারছি না৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy