অবস্থান বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। — ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে বৃহস্পতিবারও ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড’ তালাবন্ধ রেখে বিক্ষোভ-অবস্থান করলেন পড়ুয়ারা। বুধবারের মতো এ দিনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও বিভাগ খোলেনি। হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্মও। শুধু গণিত বিভাগে আন্তর্জাতিক সেমিনার হয়েছে। প্রশাসনিক ভবন এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতো জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে আন্দোলনকারীরা বাধা দেননি। উপাচার্যহীন, ফিনান্স অফিসারহীন অচলাবস্থার পরিস্থিতিতে টালমাটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা পরিসর। গত মঙ্গলবার একটি হস্টেলের মেস বন্ধ করা হয়। প্রতিবাদে, আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ারা। এ দিন আন্দোলনে একাধিক হস্টেলের পড়ুয়ারাও যোগ দেন। পরে, মেস বন্ধের নোটিস প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়।
হস্টেলের মেস সংক্রান্ত এই আন্দোলনের শুরু মঙ্গলবার। খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের টাকা ফিনান্স বিভাগ দিতে না পারায়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রামকৃষ্ণ হস্টেলের মেস নোটিস দিয়ে বন্ধ করে দেন। বুধবার থেকে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ওই হস্টেলের খাবারের ব্যবস্থা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি গত দু’দিন ২০ হাজার টাকা দিয়েছে। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক সমিতিও ১০ হাজার টাকা দিয়েছে। এই সব অর্থেই খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে অন্য হস্টেলের খাবার তালিকাতেও কাটছাঁট করা হচ্ছে। কারণ, এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে, তা হলে হস্টেলগুলোর হাতে যে টাকা রয়েছে, তা দিয়ে বেশি দিন চালানো সম্ভব নয়। নিয়ম অনুযায়ী, পড়ুয়ারা খাবার খরচ বাবদ মাসের শুরুতে টাকা দিয়ে দেন। হস্টেলগুলোর তরফে জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের দেওয়া টাকা এবং সহায়তা বাবদ অর্থে মেরেকেটে এই মাসটা কোনও ভাবে চলবে। তবে সব হস্টেলে একই সমস্যা তৈরি হলে, ছবিটা বদলে যেতে পারে। এখন বিভিন্ন সংগঠন যে টাকা দিচ্ছে, তাতে তখন কুলোবে না। কারণ, ২৫০ জন পড়ুয়ার খাবার তৈরি করতে ভাত, ডাল, আনাজ, মাছ-মাংসের সংস্থান করতে রোজ ১০ হাজার টাকার মতো লাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এতগুলি হস্টেলের খাবারের জন্য এই টাকা প্রতিদিন জোগাড় করা কঠিন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে এ দিনও পড়ুয়াদের আন্দোলন তুলে নিতে বলা হয়। পড়ুয়াদের তরফে জানানো হয়, আর কখনও হস্টেলের খাবার নিয়ে সমস্যা হবে না বলে লিখিত বয়ানে জানালে তবেই তাঁরা আন্দোলন তুলবেন। সন্ধ্যায় লিখিত আশ্বাস দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষের তরফে। আন্দোলনকারীরা কিছুটা নিশ্চিত হন। হস্টেল মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান সুভাষচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘যে ভাবেই হোক, হস্টেলের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। রামকৃষ্ণ হস্টেলের মেস বন্ধ করার নোটিসও প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।’’
উপাচার্যহীন পরিস্থিতিতে ঘনিয়ে ওঠা এই সব সমস্যার কথা আচার্য এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানানো হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত এ দিন বলেন, ‘‘আমরা বুধবারই বিষয়টি আচার্যের দফতর, উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানিয়েছি। এখনও সেখান থেকে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার পরিস্থিতির কথা জয়েন্ট রেজিস্ট্রারের দফতর থেকে আচার্য এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানানোর পরে, উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে কিছু বিশেষ তথ্য জানতে চাওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এ দিন সে সবও জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমস্যার সুরাহা কোন পথে হয়, সে দিকেই এখন তাকিয়ে উত্তরবঙ্গের শিক্ষামহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy