Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Maynaguri

এলাকায় যেতে বাধা, রাস্তায় ধর্না সাংসদের

বিজেপির দাবি, দলের সাংসদ চূড়াভাণ্ডারের পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছিলেন। কিন্ত তাঁকে পুলিশ তাঁকে রাস্তাতেই আটকে দেয়।

উদ্ধার: পুড়ে যাওয়া বাড়ির ভগ্নস্তূপ থেকে কাগজপত্র খুঁজে দেখা। সোমবার ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

উদ্ধার: পুড়ে যাওয়া বাড়ির ভগ্নস্তূপ থেকে কাগজপত্র খুঁজে দেখা। সোমবার ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়নাগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১১
Share: Save:

রাজনৈতিক অশান্তির উত্তাপ অব্যাহত ময়নাগুড়িতে। দুষ্কৃতী হামলায় তৃণমূল নেতা ভোম্বল ঘোষের মৃত্যুর জেরে রবিবার রাতে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডার এলাকা। আর সোমবার ওই এলাকায় যাওয়ার পথে বাধা পেয়ে ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের অসম মোড়ে ধর্নায় বসে পড়েন জলপাইগুড়ির বিেজপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে বাধা দিয়েছে।

বিজেপির দাবি, দলের সাংসদ চূড়াভাণ্ডারের পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছিলেন। কিন্ত তাঁকে পুলিশ তাঁকে রাস্তাতেই আটকে দেয়। জাতীয় সড়কেই অনুগামীদের নিয়ে এরপর ধর্নায় বসে পড়েন সাংসদ। পুলিশ সূত্রের খবর, সাংসদের নিরাপত্তা এবং ওই শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই পুলিশ সাংসদকে এলাকায় না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল।

তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা নৃশংস ভাবে ভোম্বলকে খুন করেছে। রবিবার সন্ধেয় মল্লিকহাটে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হলে উত্তেজিত জনতা ওই এলাকার তাদের কর্মীদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ বিজেপির। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, এলাকায় আগুন লাগানোর ঘটনায় দলের কর্মীরা জড়িত নন। বিজেপির গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনাতেই এলাকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। খুনের রাজনীতিতে তৃণমূল বিশ্বাস করে না বলে দাবি দলের।

সূত্রের খবর, রবিবার যে শববাহী গাড়িতে ভোম্বল ঘোষের মৃতদেহ নিয়ে আসা হয়েছিল, সেই গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনা বিজেপির কর্মীরাই করেছে। সাংসদ জয়ন্ত বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা তৃণমূলের অত্যাচারে ঘর-ছাড়া হয়েছেন। আমাদের আটজন কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ওই পরিবারগুলির সবকিছু। পুলিশের সামনেই এই আগুন দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে পুলিশ আমাদের পথ আটকে দেয়। পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।’’ বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, ‘‘আমরা পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হয়েছে তারই প্রমাণ এই ঘটনা।’’

ময়নাগুড়ির তৃণমূল নেতা মনোজ রায় বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা কোনও আগুন লাগায় নি। আমরা এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পক্ষে।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, ‘‘খুনের বদলে খুন আমরা কখনও চাই না। তাহলে তো ভোম্বল ঘোষকে যেদিন ওরা মেরেছিল তারপর দিনই তো আমরা কোনও বিজেপি কর্মীকে খুন করে দিতে পারতাম। আমরা এই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। হিংসার রাজনীতি করে বিজেপি। আর বিজেপির দলীয় কোন্দলেই আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। আমরা রাজনৈতিক ভাবেই বিজেপির হিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালাব।’’ জেলা তৃণমূলের একটি দলও এ দিন চূড়াভাণ্ডারে যায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার ওই এলাকায় নতুন করে আর পরিস্থিতির কোনও অবনতি ঘটেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জলপাইগুড়ির এসপি অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘আমরা এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এবং সাংসদ জয়ন্ত রায়ের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এ দিন তাঁকে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম।’’

বিজেপি সূত্রের খবর, রাত ৮টা নাগাদ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের অনুরোধে সাংসদ জয়ন্ত রায় ধর্না তুলে নিয়েছেন। দু’একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুলিশ সাংসদকে নিরাপত্তা দিয়ে ওই এলাকায় নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলেও দাবি বিজেপির।

অন্য বিষয়গুলি:

Maynaguri, Clash BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy