এত মৃত্যু কেন, প্রথম প্রশ্ন তোলে ‘আনন্দবাজার’ই।
শিলিগুড়িতে দ্রুতগতিতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া এবং মৃত্যু রুখতে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হবে কিনা, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈঠকে বসেন এই দুই বিভাগের আধিকারিকরা। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে নার্সিংহোমগুলিকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়, কোনও ভাবেই রোগী ফেরানো বরদাস্ত করা হবে না। রোগী ফেরানোর অভিযোগ পেলে নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন রোগীদের বাঁচাতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সুপার স্পেশালিটি স্তরের মেডিক্যাল টিম তৈরির সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে এই বৈঠকে।
শিলিগুড়ি শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়েছে। সংক্রমণ ছড়িয়েছে মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, ফাঁসিদেওয়াতেও। এখন পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে মৃত ২০ জনের মধ্যে ১৪ জনই শিলিগুড়ির। গত এক সপ্তাহ ধরেই আনন্দবাজারে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, শিলিগুড়িতে ‘এত মৃত্যু কেন’। স্বাস্থ্য দফতরের সূত্র থেকেই মেনে নেওয়া হচ্ছে, কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এখনও পরিকাঠামো নিয়ে নানা সমস্যা রয়েছে। সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এই অভাব পূরণ করা নিয়েও এ দিন বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে ৮ জন এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ৯ জন মারা গিয়েছেন এখন পর্যন্ত। মাটিগাড়ার বাসিন্দা এক অপথ্যালমিক অ্যাসিস্ট্যান্ট করোনায় আক্রান্ত হয়ে কাওয়াখালির কোভিডে মারা গেলে পরিবারের লোকেরা সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রাজ্যস্তর থেকেও শিলিগুড়ির সংক্রমণ এবং মৃত্যু রুখতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সংক্রমণ এবং মৃত্যু রুখতে সিদ্ধান্ত
• শিলিগুড়ি শহরে সম্পূর্ণ লক ডাউনের ভাবনা
• কাওয়াখালি কোভিডের সিসিইউকে শক্তিশালী করা
• থাকবেন অন ফ্লোর মেডিক্যাল অফিসার, ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক
• নিজস্ব নার্স, টেকনিশিয়ান
• ‘সুপার স্পেশালিটি লেভেল’-এর পরিষেবা
• কোমর্বিডিটি রোগীর মৃত্যু ঠেকাতে সুপার স্পেশালিস্ট টিম
• টিমে আট জন বিশেষজ্ঞ গ্যাসট্রোএন্টারলজিস্ট, নিউরোমেডিসিন, নিউরোসার্জেন, নেফ্রোলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট, এন্ডক্রিনোলজিস্ট, অর্থপেডিক, সাইক্রিয়াটিস্ট
• নার্সিংহোম রোগী ফেরালে লাইসেন্স বাতিলের হুশিয়ারি
এদিন বৈঠকে কোভিড হাসপাতালে বাড়তি চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী রাখার কথা জানানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন করোনা নিয়ন্ত্রণে উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায়, দার্জিলিঙের জেলাশাসক, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং কোভিড হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘লকডাউন ভুলে গিয়েছে মানুষ। শিলিগুড়িতে যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তা ঠেকাতে অনেক লোক সম্পূর্ণ লকডাউন চাইছেন। চিন্তাভাবনা করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেব।’’ নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধেও রোগী ফেরানো, করোনা হলে তাঁকে জোর করে কোভিডে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। তাদের প্রতি সুশান্তবাবুর বার্তা, সরকারি নির্দেশ রয়েছে কোনও রোগীকে ফেরান যাবে না। তিনি বলেন, ‘‘কেউ রোগী ফিরিয়েছেন বলে যদি অভিযোগ পাই তা হলে লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। জেলাশাসককেও বলা আছে।’’ নার্সিংহোমগুলি কর্তৃপক্ষের একাংশ জানান, সব ক্ষেত্রে তাঁদের করোনা রোগী রাখার মতো পরিকাঠামো নেই। বড় নার্সিংহোমগুলি সেই ব্যবস্থা করেছেন বলে দাবি করলেও রোগী রাখার ক্ষেত্রে অনীহা কেন তার সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy