শোকার্ত: ভেঙে পড়েছেন পুখুরিয়ার পরানপুরে নিহত কিশোর অনীক দাসের (ইনসেটে) বাবা, মা ও দিদিরা। নিজস্ব চিত্র।
পড়শি এক কিশোরকে আটকে টাকা আদায়ের ছক কষেছিল তারই সহপাঠী এবং আরও দু’জন। কিশোরকে পরিত্যক্ত শৌচাগারে আটকে রেখে বাড়ির সামনে মুক্তিপণ চেয়ে চিঠিও রেখে এসেছিল তারা। আটক সেই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হল শৌচাগার থেকে। গলায় পেঁচানো ছিল বিদ্যুতের তার। মালদহের পুখুরিয়ার পরানপুরের কালীতলা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা।
পুলিশ জানায়, মৃত কিশোরের নাম অনীক দাস (১৩)। স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত সে। টাকা আদায়ের ছক কষলেও ধৃতরা পেশাদার নয়। ফলে অনীক ছাড়া পেলে জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়েই বিদ্যুতের তার গলায় পেঁচিয়ে তাকে খুন করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ধৃত তিন জনের মধ্যে একজন নাবালক। আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ডেকোরেটর ব্যবসায়ী আশিস দাস আম, কাঠের ব্যবসাও করেন। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে অনীক ছোট। সন্ধেয় ব্যাডমিন্টন খেলতে পাশেই এক সহপাঠীর বাড়িতে যাচ্ছে বলে বার হয় অনীক। কিন্তু কিছু ক্ষণ বাদে অনীকের দিদিকে ফোন করে সে কোথায় তা জানতে চায় ওই সহপাঠী। সন্দেহ হওয়ায় ভাইকে খুঁজতে বার হন দিদি অরিত্রি। দরজা খুলতেই দেখেন, বাড়ির সামনে একটি চিঠি পড়ে রয়েছে। তাতে লেখা, ‘ছেলেকে যদি বাঁচাতে চান তা হলে টাকা লাগবে।’
ভাইয়ের ওই সহপাঠীর বাড়িতে গিয়ে সেই চিঠির কথা বলতেই তার এক দাদা চিঠিটি কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। এর পরে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কিছুক্ষণ বাদে ৩০ মিটার দূরে পরিত্যক্ত বাড়ির শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় অনীকের দেহ। রাতেই ওই সহপাঠী ও আরও দু’জনকে আটক করে পুলিশ। টানা জেরার পর রাতেই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। অনীককে আটকে অপহরণের কথা বলে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের ছক কষা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু পরে ধরা পড়ার ভয়ে তারা অনীককে খুন বলে ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার জেরে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন বাবা আশিস দাস, মা রুমি, দুই দিদি। শোকস্তব্ধ পড়শিরাও। ঘটনার পর থেকেই মা আক্ষেপ করে চলেছেন, ‘‘যাদের সঙ্গে দিনরাত থাকে, খেলাধুলা করে, তারাই যে এমন সর্বনাশ করতে পারে ভাবতেও পারিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy