পুলিশি প্রহরায় পুজো মিটে গেলেও অশান্তি মিটল না। শিলিগুড়ি ‘নাইট’ কলেজের (কমার্স) ডিজে-র দাপাদাপিতে বন্ধ হয়ে গেল ‘ডে’ কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে সোমবার সকাল থেকেই শিলিগুড়ি ‘ডে’ কলেজ বনাম নাইট কলেজের দ্বৈরথ চলছিল। রাতে তা আরও বড় আকার নিল। দুই কলেজের রেষারেষিতে ‘ডে’ কলেজের অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনুষ্ঠানমঞ্চে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদে শামিল হন ‘ডে’ কলেজের পড়ুয়ারা। ‘নাইট’ কলেজের পড়ুয়ারা অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
অশান্তির সূত্রপাত সরস্বতী পুজোর জায়গা বাছাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ কলেজের অধ্যাপকদের ‘দেখে নেওয়া হবে’ বলে হুমকি দেন সৌরভ ভাস্কর ওরফে ‘মার্ডার’ নামে নাইট কলেজের এক প্রাক্তনী। তিনি দার্জিলিং জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অন্যতম নেতাও বটে। রাতে অনুষ্ঠান বন্ধের জন্যও ‘মার্ডার’কে দায়ী করেছেন ‘ডে’ কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। যদিও ‘অভিযুক্ত’ অন্য দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘একই প্রাঙ্গণে দুই কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যথেষ্ট ভাল সম্পর্ক। সম্প্রীতি রয়েছে। নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আমরা একই মঞ্চ, একই আলো ভাগ করে নিই। যারা প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ করল, তারাই আমাদের কলেজে এসে আনন্দ করে গেল।’’
বস্তুত, দিনের মতো রাতেও গন্ডগোল এবং তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা মানতেই চাননি তৃণমূল নেতা। তিনি বলেন, ‘‘প্রাক্তনী হিসাবে আমার কলেজে আসার অধিকার রয়েছে। আর আমার বিরুদ্ধে বিদ্যাবতী আগরওয়াল নামে এক অধ্যাপিকার নেতৃত্বে কুৎসা করা হচ্ছে। তাঁর উস্কানিতেই সমস্ত অকাজ হচ্ছে। প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে আমি থানায় অভিযোগ করব।’’
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, যে অধ্যাপিকা সৌরভের বিরুদ্ধে সকালেও অভিযোগ করেছেন, তাঁর দাবি, ‘‘গতকাল থেকেই এই সমস্যা শুরু হয়েছে। যে হেতু আমাদের পুজো এ বার ৭৫তম বছরে পা দিল, সে জন্য অনুষ্ঠানের জায়গা পরিবর্তন করেছি। আগে থেকেই কথা ছিল,আমরা ৩ তারিখ (ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠান করব। তাতে ওঁদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু গতকাল (রবিবার) রাত থেকেও সমস্যার শুরু।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এ বিষয়টি নিয়ে ‘নাইট’ কলেজ কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার জানিয়েছি। কিন্তু তাঁরা সোমবার জানিয়েছেন, তাঁদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে সব। আর যা হয়েছে, সেটা ছাত্রছাত্রীদের সিদ্ধান্ত। এখানে আমার কোনও ভূমিকা নেই। সৌরভের যদি মনে হয় তিনি অভিযোগ জানাবেন, জানাতেই পারেন।’’ প্রতিবাদে শামিল হওয়া ‘ডে’ কলেজের এক প্রাক্তনী বিবেক গুণ বলেন, ‘‘আমরা সুষ্ঠু ভাবে অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওদের ডিজে-র দাপট এতটাই যে, আর অনুষ্ঠান এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এ ভাবে সংস্কৃতি নষ্ট করা উচিত নয়। আমাদের নানা রকম টেকনিক্যাল সমস্যা হচ্ছিল অনুষ্ঠান এগিয়ে নিয়ে যেতে। তাই বন্ধ করে দিলাম।’’