চোপড়ায় তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের দেহরক্ষীর অস্বাভাবিক মৃত্যু! হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হল দেহ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়, যা মনে করাচ্ছে বছর ছয়েক আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষীর মৃত্যুর কথা।
মৃত ওই যুবকের নাম মহম্মদ সুলতান। চোপড়ার বিধায়ক হামিদুলের দেহরক্ষী ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ইসলামপুরের তিস্তাপল্লি এলাকার একটি হোটেলের ঘরে উঠেছিলেন সুলতান। দেহরক্ষীর সঙ্গে এক জন মহিলাও ছিলেন বলে হোটেল সূত্রে জানা গিয়েছে। হোটেলের মালিকের দাবি, ওই মহিলাকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছিলেন সুলতান।
হোটেলের মালিক সুদেব দাস জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে হোটেলের ঘরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সুলতান। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শেষরক্ষা হয়নি। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হোটেলে পৌঁছন ইসলামপুর থানার আইসি হীরক বিশ্বাস। কী ভাবে ওই দেহরক্ষীর মৃত্যু হল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। হোটেলের ওই ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি বিয়ারের বোতল ও দু’টি কাচের গ্লাস। পাশাপাশি, সুলতানের সঙ্গী মহিলা কে ছিলেন, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা শৈবাল মিত্র বলেন, ‘‘দুপুরে ফোন করেছিলাম। থানা থেকে ফোন তোলা হয়। তখনই জানতে পারি, সুলতানদার মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, হোটেলে খাবার খাওয়ার সময়েই মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন উনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। এক মহিলা ওঁকে নিয়ে এসেছিলেন, তিনি ওঁর আত্মীয়ও হতে পারেন। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’’
বছর ছয়েক আগে এমনই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীর। নন্দীগ্রামের বিধায়কের দেহরক্ষী থাকাকালীনই ২০১৮ সালে ‘রহস্যজনক’ ভাবে মৃত্যু হয়েছিল শুভব্রতের। ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দুর নিরাপত্তারক্ষী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরের দিন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর দু’বছর আট মাস পর ২০২১ সালের জুলাই মাসে স্বামীর মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শুভব্রতের স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী। দায়ের হওয়া অভিযোগে শুভেন্দু অধিকারী-সহ বেশ কয়েক জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই মামলার দায়িত্ব নেয় সিআইডি। শুভেন্দুর কাঁথির বাড়ি শান্তিকুঞ্জেও গিয়েছিল সিআইডির দল। পরে অবশ্য আদালত থেকে রক্ষাকবচ পান শুভেন্দু। কলকাতা হাই কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল, মৃত্যুর এত দিন বাদে কেন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সঙ্গে পুলিশকেও ‘ভর্ৎসনা’ করেছিল আদালত।